রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি: ছেলে গ্রেফতারের খবর শুনে চিৎকার করে জ্ঞান হারান অশীতিপর বৃদ্ধ জব্বার আলী। প্রায় সতেরো ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার সময় মৃত্যু কোলে ঢলে পরেন।
এঘটনা ঘটে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামে। নিহত জব্বার আলী ওই গ্রামের মৃত শাজাহান মুন্সির ছেলে। নিহতের ছেলে মো. কবির হোসেন ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক। জুলাই বিপ্লবের হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার দুপুরে পুলিশ কবিরকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।
সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখাযায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। জব্বারের পাঁচ মেয়ে,স্ত্রী স্বজনরা আহাজারী করছে। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাড়ির পাশে চলছে কবর খননের কাজ।
নিহতের স্ত্রী কদর জান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের নামে কোন মামলা ছিলোনা। সে দোকানে ব্যবসা করে। পুলিশ এসে তাকে দোকান থেকে ধরে নিয়ে গেছে। এক মাত্র ছেলের গ্রেফতারের খবর শুনে আমার স্বামী চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারান। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান।
নিহতের মেয়ে পারুল অভিযোগ করে বলেন, আমরা পাঁচ বোনের এক ভাই কবির। সে বাবার সাত রাজার ধন নীলমনী। বাবার অতি আদরের কবির। তাকে ঘিরে ছিলো বাবার সব। তার অপরাধ সে আওয়ামিলীগ করে। এ ছাড়া এলাকায় কোন অপরাধ বিশৃংখলার সাথে জড়িত নয়। তার বিরোদ্ধে কোন মামলা নেই। সে নিয়মিত দোকানে বসে ব্যবসা করতো। বুধবার দুপুরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। এ খবর শুনে বাবা হাওমাও করে উঠেন। তার পর জ্ঞান হারান। প্রায় সতেরো ঘন্টা পর তিনি মৃত্যুর কুলে ঢলে পরেন।
নিহতের নাতি মেহেদী হাসান জানায়, বাবা আওয়ামিলীগ করতো। তাঁর নামে কোন মামলা ছিলোনা। তিনি পালিয়ে ও থাকতেন না। বুধবার দুপুরে সাদা পোষাকের লোকজন এসে তাকে পুলিশ পরিচয়ে নিয়ে যায়। পরে থানায় যোগাযোগ করে জানতে পাই তাকে জুলাই বিপ্লবের হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার দাদা অসুস্থ্য। বাবার গ্রেফতারের খবর শুনে তিনি চিৎকার করে উঠেন। তারপর জ্ঞান হারান। ছেলের গ্রেফতারের শোকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন,কবির হোসেন জুলাই বিপ্লবের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।