আমরা একে অপরকে দোষারোপ করি আর মশার কামড় খাই

Slider বাংলার মুখোমুখি

দেশে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও দায়িত্বরত কর্মকর্তারা একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা একইসঙ্গে একে অপরকে দোষারোপ করছি আর মশার কামড় খাচ্ছি।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ডেঙ্গু রোগের বাহকের কীটতাত্ত্বিক জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইদুর রহমান বলেন, সচেতনতাই হলো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মূলমন্ত্র। আমরা সবাই জানি, কোথায় মশা উৎপত্তি হয়, কীভাবে ছড়ায়, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমরা কেউ নিয়ম মানতে এবং সচেতন হতে রাজি নই, এটাই হলো ডেঙ্গু বিস্তারে মূল সমস্যা।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে গৃহায়ন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুই সিটি কর্পোরেশনকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে পারে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নির্মাণাধীন বাড়িতে জলাবদ্ধতার বিষয়ে সতর্কতার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অসচেতনতাই ডেঙ্গু মশা বিস্তারের মূল কারণ। আমরা একে অপরকে দোষারোপ করি কিন্তু মশার কামড় সবাই ভোগ করি। কাউকে দোষারোপ না করে ডেঙ্গু মশা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যার যার অবস্থান ও কর্মস্থল থেকে আমরা সবাই যদি যথাসাধ্য চেষ্টা করি তবেই এ মহামারি থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মেয়াদ অনেক বেশি। অন্যান্য বছরে জুন-অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু বলবৎ থাকলেও এ বছর ডিসেম্বর মাস শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বিদ্যমান। এ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আমরা একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করি।

তিনি বলেন, জরিপে দেখা গেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চেয়ে আনুপাতিক হারে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বেশি। ঢাকার সব হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীর চাপ রয়েছে। বেসরকারি পর্যায়েও বারডেম হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মুগদা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল উল্লেখযোগ্য। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলারও অনেক ডেঙ্গু রোগী ঢাকায় চিকিৎসা গ্রহণ করে। সে কারণে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *