মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরীর’ ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ

Slider বাংলার মুখোমুখি


বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট তার পরিবারের সঙ্গে মিলেছে। এখন পরিবারে পছন্দমতো কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের পর বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

পরে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী বলেন, ছদ্মবেশে থাকা সেই মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী। ডিএনএ টেস্টে তা প্রমাণিত হয়েছে। হারিছ চৌধুরীর মরদেহ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে সিলেটের কানাইঘাটে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দেন।

২০২১ সালে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী ‘মাহমুদুর রহমান’ পরিচয়ে ঢাকার সাভারের জালালাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।

হারিছ চৌধুরীর মেয়ে জানান, সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচারী সরকার ওদের গোয়েন্দা বিভাগ একটা নাটক রচনা করে বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মিডিয়া একটার পর একটা রিপোর্ট করেছে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। এটা নিয়ে যেন কখনো প্রশ্ন না উঠে সেটা ডিটারমিন করার জন্য এ রিট করেছি। আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে সন্তান হিসেবে এটা খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক। এখনো মানুষ জিজ্ঞেস করে সত্যিই কি মারা গেছেন। আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই এটা শেষ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালত নিরাশ করেননি।

রুলে বলা হয়, সাভারের জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদ্রাসার কবরস্থানে মাহমুদুর রহমান নামে কবর দেওয়া আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তার নামে কেন ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না। এছাড়া ইন্টারপোল রেড নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না একইসঙ্গে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার যথাযথ সম্মান দিয়ে কেন কবরস্থ করা হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়।

স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল (জন্ম ও মৃত্যু), সিআইডির পরিচালক, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ও সাভার মডেল থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সটকে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়েভারতে চলে যান। ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন।

পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট তার পরিবারের সঙ্গে মিলেছে। এখন পরিবারে পছন্দমতো কবরস্থানে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা যাবে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের পর বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *