রমজান আলী রুবেল.শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে বন খেকোদের আস্তানা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে যৌথ বাহিনী উপজেলার রাজেন্দ্রপুরে রেঞ্জের অধিন কাফিলাতলী গ্রাম ও ইজ্জতপুর বাজারে অভিযান চালায়। অভিযানে শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ দখল থেকে বিশ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে সাত একর বন ভূমি উদ্ধার করা হয়। অভিযান শেষে ফেরার পথে বন খেকোরা পেছন থেকে হামলা চালায়। হামলাকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ী সহ তিনটি গাড়ী, দুইটি এক্সকে ভেটর ভাংচুর করে। হামলা কারীদের ইটের আঘাতে শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি)আতাহার শাকিল, ইউএনউর গাড়ি চালক আ.হানিফ,ষ্টাফ আশিকুর রহমান,রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়ি চালক লিটন, ভেকু চালক রাসেল, হাকিমুল্লাহ সহ অন্তত্য দশ জনর আহত হয়। এ ঘটনায় দুই হামলাকারীকে আটক করেছে আইনশৃংখলা বাহীনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যাবিষ্টার সজিব আহমেদ জানান, সকাল দশটা থেকে সেনাবাহিনী,র্যাব,পুলিশ,আনসার,বনকর্মীদের যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে উপজেলার কাফিলাতলী গ্রামে এবং ইজ্জতপুর বাজারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সাড়ে সাত একর ভনভূমি ইদ্ধার করা হয়। উচ্ছেদ করা হয় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। অভিযান শেষে সাবাই চলে যাচ্ছিলেন। সেনাবাহিনী চলে গেছে। আমরা ও চলে আসছিলাম। এ সময় পেছন থেকে অর্ধ শতাধিক হামলাকারী দা,লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। হামলা কারীরা তিনটি গাড়ি,দু’টি এক্সকে ভেটর ভাংচুর করে। ইটের আঘাতে এসি ল্যান্ড আতাহার শাকিল,আমার ষ্টাফ,এক্সকে ভেটরের দুই চালক সহ অন্তত্য দশ জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুই হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে মাঠে নেমেছ আইনশৃংখলা বাহিনী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সবধরনের আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার ৪৯নং কাফিলতলী মৌজার সিএস ২১ দাগ এবং আরএস ২০২ দাগের বনের জমি দীর্ঘ দিন ধরে জবর দখল হয়ে আসছে। গত পাঁচ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শ্রীপুরে ব্যাপক হারে বনের জমি দখল হয়। বন কর্মীরা বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন। এর ব্যতিক্রম ছিলোনা কাফিলাতলী মৌজায়। এ সময় ওই মৌজায় বন বিভাগের বাধা উপেক্ষা করে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মিত হয়। বাধা দিতে গিয়ে হামলার মিকার হন বনকর্মীরা।
সূত্রমতে বনভূমি উদ্ধারের বিষয়টি নীতি গত ভাবে সিদ্বান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন ওই গ্রামে বনের জমিতে থাকা স্থাপনা সরিয়ে নিতে এলাকায় জানান দেন। এতে ও কোন প্রতিকৃয়া দেখা যায়নি। বন খেকোদের দখল চলতেই থাকে। সোমবার সকাল দশটা থেকে সেনাবাহিনী,র্যাব,পুলিশ,আনসার ও বন কর্মদের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী কাফিলা তলী গ্রামে এক্সকেভেটর নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। অভিযান কালে কাফিলাতলী গ্রাম ও ইজ্জতপুর বাজার এলাকা থেকে আ.ছাত্তার,কেরামত আলী, নজরুল ইসলাম,আমানুল্লা,আতিকুল ইসলাম,হোসেন আলী.সেলিম,রশিদ সহ শতাধিক জবরদখল কারীর দখলে থাকা সাড়ে সাত একর বনভূমি উদ্ধার করাহয়। গুড়িয়ে দেয়া হয় বন খেকোদের রাজত্ব কথিত এলাকার শতাধিক বশত বাড়ি,অবৈধ স্থাপনা। অভিযান শেষে চলে আসার পথে পেছন থেকে বন খেকুরা হামলা চালিয়ে অন্তত্য দশ জনকে আহত করে। ভাংচুর করা হয় তিনটি গাড়ি,দু’টি এক্সকেভেটর।
ঢাকা বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক সামসুল আরেফিন জানান, বন আইনের ৬৬ধারায় কাফিলাতলী গ্রাম এবং ইজ্জতপুর বাজারে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত হয়। দিন ব্যাপী অভিযানে প্রায় বিশ কোটি টাকা মূল্যে সাড়ে সাত একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়। অভিযান শেষে ফেরার পথে বন জবরদখল কারীরা পেছন থেকে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিনটি গাড়ী,দু’টি এক্সকে ভেটর ভাংচুর করে। হামলায় আহত হয় অন্তত্য দশজন।
তিনি আরো জানান, বনভূমি জবরদখলকারীদের ছাড় দেয়া হবেনা। যারা হামলা করেছে তাদের আইনের আওায় আনা হবে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যারিষ্টার সজিব আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে ছিলেন ঢাকা বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. সামসুল আরেফীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল, রাজেন্দ্রপুরের রেঞ্জকর্মকর্তা জুয়েল রানা, মো. মোখলেছুর রহমান, শ্রীপুর থানার পরিদর্শক অপারেশন নয়নকর সহ যৌথবাহিনীর সদস্য বৃন্দ।