রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: জোরপূর্বক জমি জবরদখলের ঘটনায় পুলিশের উপর হামলা, মারধর ওয়্যারলেস মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগী জমির মালিকদের অস্ত্রের জিম্মি করে জমি জবরদখল করে। জমি জবরদখল বাঁধা দিতে গেলে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রসীরা হামলা চালিয়ে আহত করে পুলিশের তিন সদস্যকে। পুলিশ পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভুক্তভোগী জমির মালিকরা অভিযোগ করে বলেন শতাধিক চিহৃত সন্ত্রাসী ভাড়া করে জমি জবরদখল করে। পুলিশের সামনে মধ্যপান করে উল্লাস করে সন্ত্রাসীরা।
১১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই শামীম (৩৮) কনস্টেবল পলাশ (৩২) ও রফিকুল ইসলাম (৩৪)।
আহত ভুক্তভোগীরা হলেন, ওমর ফারুক লিপু (৪০), স্মৃতি আক্তার (৩০) ও বাবু (২০)।
ভুক্তভোগী গলদাপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার তিন একর জমি জোরপূর্বক জবরদখল করে নিচ্ছে স্থানীয় শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে। আমরা জমি জবরদখল বাঁধা দিতে গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের মারধর করে আহত করে। আমাদের জমির গাছপালা কেটে সাবার করছে। আমাদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছে। সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়ির চারপাশে অবরুদ্ধ জিম্মি করে রাখছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি না। এরপর পুলিশে খবর দিলে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। পুলিশের ওয়্যারলেস মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পুলিশ দৌড়ে গভীর গজারি বনের ভেতরে নিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। কনস্টেবল রফিকুলকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। মারধর করা হয়েছে এসআই শামীম ও কনস্টেবল পলাশ নামের এক সদস্যকে। তিনি আরও জানান, জমি জবরদখলের পাশাপাশি কেটে ফেলা হয় তিন শতাধিক গাছপালা।
ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার বলেন, পুলিশ আসার পরপরই তানিম নামে যুবক পুলিশকে পিছন থেকে হামলা করে সাইকেলে ফ্রক দিয়ে আঘাত করে। এসময় দারোগা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। লুটিয়ে মাটিতে পড়ার পরপরই তানিমের ভাই তানিম পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে টানাটানি করে। এরপর পুলিশকে অনেক মারধর শুরু করে। পুলিশ দৌড়ে জঙ্গলের ভেতর পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। একজন ব্যক্তি বাড়িতে এসে ওয়্যারলেস আর ডায়েরি দিয়ে যায়।
আহত শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই শামীম আল মামুন বলেন, মারধরের খবর পেয়ে দুজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরপরই সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে। আমার সঙ্গে থাকা দুজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। একজন পুলিশ সদস্যকে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। আমরা ঝোপঝাড়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করি। আমার ওয়্যারলেস ও মোবাইল নিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত পুলিশ আসলে ওয়্যারলেস মোবাইল আর ডায়েরি ফিরিয়ে দেয় এক নারীর মাধ্যমে।
অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা জমি বিক্রি করে দিয়েছে মালিকের কাছে। কিন্তু জনৈক নিজাম উদ্দিন আমাদের জমিতে কাজ বাধা দেয়। পুলিশের উপর হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, পুলিশের উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একজন নারীর মাধ্যমে পুলিশের ব্যবহৃত ওয়্যারলেস ফিরিয়ে দিয়েছে।