রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি. এতিম নাতির বিয়ের খরচ যোগাতে একটি বকনা গরু পালছিলেন হত দরিদ্র ষাটোর্ধ জাহাম্মদ আলী। এক আত্মীয় কে বাড়িতে আশ্রয় দেয়ায় তার উপর মিথ্যা অভিযোগ তুলে স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবলু সরকা,তার ছোট ভাই কামরুল ও তার সহযোগীরা। ওই বৃদ্ধাকে নির্যাতন করে তার এতিম নাতির বিয়ের জন্য লালন পালন করা এক মাত্র বকনা গুরুটি বিক্রি করেদেন ওই নেতারা। হাতিয়ে নেন গরুবিক্রির সমোদয় টাকা। একটি হতদরিদ্র পরিবারের উপর এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে।
ভূক্তভোগী জাহাম্মদ আলী ফকির(৬৫) ওই গ্রামের মৃত আলী আকবর ফকিরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ঝাড়– বিক্রেতা।
অভিযুক্তরা হলেন কাওরাইদ ইউনিয়নের চার নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বাবলু সরকার, তার ছোট ভাই শ্রমিকদল নেতা কামরুল সরকার ,তাদের সহযোগী একই গ্রামের ইব্রাহীম,রাণা, রমজান-১, রমজান-২,ওসমান সহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি।
ভূক্তভোগী জাহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী জামিনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, গত রবিাবর ২৭অক্টোবর ভোর ছয়টার দিকে ইব্রাহীম তাকে ফোন করে জানায় তার এক আত্মীয় আল আমীন একটি মেয়ে সহ আটক আছে। খবর পেয়ে জাহাম্মদ স্থানীয় তারকাটা বাজারে যান। সেখানে ইব্রাহীম ও তার সহযোগীরা আল আমীনকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবী করে। ওই সময় আল আমীন টাকা দিতে অপারগ হয়। পরে আল আমীন ও তার প্রেমিকা স্মৃতিকে দশ হাজার টাকার চুক্তিতে জাহাম্মদ আলীর জিম্মায় দেয়। বিকেলের মধ্যে আল আমীন ওই টাকা দিতে পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে অভিযুক্তরা জাহাম্মদ আলী ও আল আমীন জুটিকে তারকাটা বাজারে ডেকে নেয়। জাহাম্মদ আলীর বাড়িতে ওই প্রেমিক জুটি রাখার অপবাদ দিয়ে বৃদ্ধ জাহাম্মদকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। এসময় জাহাম্মদ আলীর নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবী করে অভিযুক্তরা। পরে তা কমিয়ে ত্রিশ হাজার দাবী করা হয়। হত দরিদ্র জাহাম্মদ টাকা দিতে পারেনি। ওই টাকা আদায় করতে এতিম নাতি রাকিবুলের বিয়ের জন্য রাখা বকনা গরুটি স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে ডেকে তার নিকট বিক্রি করে অভিযুক্তরা। এ সময় ইব্রাহীম জাহাম্মদ আলীর স্ত্রীর হাতে ছয় হাজার টাকা দিয়ে গরুবিক্রির সমোদয় টাকা নিয়ে যায়।
একটি হত দরিদ্র পরিবারের গরু বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়রা বিষয়টি এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গরুর খাবারের গামলা(পাত্র)’র সামনে দাড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন জাহাম্মদ দম্পতি। আবেগাপ্লুত কন্ঠে জাহাম্মদ বলেন, এক মাত্র এতিম নাতি রাকিবুলকে একটি বকনা গরু কিনে দিয়েছিলাম। গরুটি লালন পালন করছিলাম বড় করে তার বিয়ে টাকা যোগাড় করবো। সে ভাগ্য হলোনা। অভিযুক্তরা বিএনপি দলের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে নির্যাতন করে, বাড়ি পুড়িয়ে এলাকা ছারা হুমকি দেয়। মিথ্যা অভিযোগে পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের গরু বিক্রি করে সে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত বিএনপির নেতা বাবলু সরকারকে ফোন করলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্য মূলক কথা বলেন।
কাওরাইদ চার নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মমিনুল কাদের বলেন, আমার নিকট থেকে আটক যুবক যুবতীর অভিভাবক গন স্বাক্ষর করে জিম্মায় নিয়ে যান। ওই জিম্মা নামায় জাহাম্মদ এর স্বাক্ষর নেয়া হয়। গরু বিক্রির বিষয়ে তিনি জানেন না।
কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল হক মন্ডল বলেন, বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে জেনেছি। এবিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। বিএনপির নাম ভাঙ্গীয়ে যদি কেউ এমন অপরাধ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।