শ্রেণিকক্ষে লাঠি হাতে যুবক, কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে ‘মানসিক রোগী’

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের লেকচার গ্যালারিতে লাঠি হাতে ঢুকে পড়েন এক যুবক। এসময় আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যান। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, লাঠি হাতে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়া ওই যুবক মানসিক রোগী।

রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, সকাল ৮টায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক মানসিক রোগী কলেজের লেকচার গ্যালারিতে ঢুকে পড়েন। এসময় রোগীটি প্রলাপ বকার পাশাপাশি লাঠি দিয়ে মেঝেতে আঘাত করতে থাকেন। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে গ্যালারি থেকে বেরিয়ে যান। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে ওই যুবককে লেকচার গ্যালারি থেকে বের করে নিয়ে যান দায়িত্বে থাকা স্টাফ।

এদিকে ওই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে দেখা গেছে। ভুমি হোসাইন নামের একজন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ। বিপ্লবী ইসলামিক রিপাবলিক স্টেট অব বাংলাদেশ! লাঠি দিয়ে ভয় দেখানো হাউ ডু ইউ ফিল গাইজ!’

এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে প্রকৃত ঘটনাও তুলে ধরেন তারা। সলিমুল্লাহ মেডিকেলের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসনীম অর্চি ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘একজন মানসিকভাবে অসুস্থ লোক লাঠি হাতে লেকচার গ্যালারিতে ঢুকে পড়েন। তিনি ক্রমাগত প্রলাপ বলছিলেন এবং এলোমেলোভাবে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি দেখাচ্ছিলেন। পরে লেকচার গ্যালারির দায়িত্বে থাকা স্টাফ তাকে বের করে নিয়ে যান। এভাবে হুট করে একজন লেকচার গ্যালারিতে ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা থেকে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলাম। কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর এটা তুলে ধরাই ছিল আমার উদ্দেশ্য।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) নিকটবর্তী ডিভিশনের কয়েকজন সদস্য এসে কথা বলে গেছেন। এটা একটা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এই ঘটনাকে কতিপয় ব্যক্তিবর্গ বিকৃত করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে যেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’

তাওসিফ আহমেদ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ফেসবুক একটা ভীতিকর জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন এই ভিডিও এবং ক্যাপশনটি আমার সামনে আসে, তখন খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বিষয়টি সত্যি ভেবে আমিও আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিলাম কিন্তু পরে যখন আসল বিষয়টি জানলাম খুবই অবাক হলাম। সামান্য একটা বিষয়কে কতটা ভয়াবহ আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। যারা এ গুজব ছড়িয়েছে, আমার মনে হয় দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্যই ছড়িয়েছে। অবশ্যই তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মাজহারুল শাহিন বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে ওই যুবকটিকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে ওই ক্লাসের কেউই তাকে চেনে না। কেউ কেউ বলছে সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী। তবে আমরা কোনোটিই এখনও নিশ্চিত নই। আমি কাল (সোমবার) কলেজে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আরও জানার চেষ্টা করব এবং আমার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় যদি কোন ঝুঁকি তৈরি হয়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, দেখার পরই আমি স্থানীয় পুলিশ ও র‍্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাদের ভিডিওটি দিয়েছি। তারা আমাকে জানিয়েছে ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *