রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের গোলাগুলিতে শিশুসহ তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এতে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ায় নিরাপত্তা চেয়ে রাতে থানা ঘেরাও করেন স্থানীয়রা।
এ সময় দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দেয় পুলিশ।
জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায় বাধা দিলেই হামলা চালানো হচ্ছে। অপরাধ অনেকগুণ বেড়ে গেছে।
স্থানীয় একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘এক শিশুর পাশে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ গুলি এসে আমার হাতে ও পায়ে লাগে। আর শিশুর গায়েও কয়েকটা লাগে।’
স্থানীয়রা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।
তেজগাঁও জোনের এডিসি মোহাম্মদ জিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের অভিযান চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। আমাদের সক্ষমতার কারণে হয়তো টহল দেওয়াটা দুর্বল হচ্ছে। এটার জন্য আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আজকে থেকেই অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হচ্ছে। আমরা টহল জোরদার করার মাধ্যমে মোহাম্মদপুর এলাকার এই ভয়ংকর অবস্থার নিরসন করা হবে।’
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিরা মোহাম্মদপুর থানায় যান। এ সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের কার্যক্রমের বিষয়ে আপত্তি জানায় তারা। তখন তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ জিয়াউল হকের সঙ্গে কথা বলেন। ছাত্র-জনতার পক্ষে তাদের প্রতিনিধিরা এডিসির কাছে মোহাম্মদপুর এলাকার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন। পাশাপাশি ছিনতাই রোধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
দুই পক্ষের আলাপচারিতায় পুলিশি ব্যর্থতার বিষয়টি তুলে ধরেন এডিসি জিয়াউল হক। তিনি বলেন, ‘আমার থানায় জনবল কম আছে, এটা সব সময় থাকে, এখন হয়ত আরও একটু কম আছে, আমার গাড়ি কম আছে। এগুলো কোনো এক্সকিউজ হতে পারে না। আমি যখন এই পোশাকটা (পুলিশের পোশাক) পরে এসেছি, আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনাকে নিরাপত্তা দেওয়া। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করতেছি, আমি সেক্ষেত্রে ব্যর্থ।’
এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন তেজগাঁও জোনের এই অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার।
ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলেও পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হয়। নিয়মতান্ত্রিকভাবে পুলিশ ও ছাত্র-জনতা মিলেমিশে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এ সময় সব কিছু ঠিক করতে পুলিশকে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিরা।