বগুড়ায় প্রায় ১৭ বছর পর জামায়াতে ইসলামের গণজমায়েত

Slider রাজশাহী


দীর্ঘ প্রায় (১৭)সতেরো বছর ফ্যাসিবাদী দু:শাসনের কালো মেঘ দূর হওয়ার পর বগুড়া জেলার শেরপুর শহিদিয়া আলিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠের ময়দানে নতুন করে জেগে উঠেছে “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী”। জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে টিকে থাকা দলের নেতা-কর্মীরা আবার দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। দলের শক্তির জানান দিতে আয়োজন করা হয় বিশাল গণজমায়েতের।শনিবার, ০৫ অক্টোবর/২৪, বিকাল (৩.৪৫pm)টায় শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠের ময়দানে শেরপুর উপজেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এই গণজমায়েতে প্রায় ৩০০০/৪০০০ হাজার মানুষের ঢল নামে এমন কি কোথাও পা রাখার ঠাই(জায়গা) ছিল না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত গণজমায়েতে সভাপতিত্ব করেন শেরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক শেরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জননেতা মাওলানা আলহাজ্ব দবিবুর রহমান।প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রিয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা পূর্বের আমির অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন ও জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মো: শাহিনুর আলম।প্রধান অতিথি বলেন, শেখ হাসিনা বিগত ১৭ বছর শুধু মানুষ খুন করেনি। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশের গোলামী করতে গিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পরপরই বিডিআর বিদ্রোহের নামে চৌকস, দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যা করে সেনাবাহিনীকে দূর্বল করেছে। বিডিআর বিলুপ্তের মাধ্যমে সীমান্ত অরক্ষিত করেছে। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে একের পর চুক্তি করে দেশের মানুষকে প্রতিবেশী দেশের কাছে জিম্মি করে রেখেছে।তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে। দেশের ১৭ কোটি মানুষকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য একটি সুখী, সমৃদ্ধ, কল্যাণ রাস্ট্র গড়ে তুলতে হবে। প্রধান অতিথি বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশটাকে নতুন করে গড়ার কাজ করছেন।এই সরকারকে অকার্যকর করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী হাসিনা বিদেশের মাটিতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে।দেশবাসী তার কোন ষড়যন্ত্র সফল হতে দিবেনা। তিনি দলীয় স্বার্থের ঊর্দ্ধে উঠে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান। সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব দবিবুর রহমান নতুন বাংলাদেশ গঠনে সকলের সহযোগিতা কামনা কামনা করেন।সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই গণজমায়েতের নির্ধারিত মাদ্রাসা মাঠে নেতাকর্মিরা আসতে শুরু করেন। দুপুর একটার পর শেরপুর শহর মিছিলের শহরে পরিনত হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মিছিলের স্রোত বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে শেরপুর আলিয়া মাদরাসা ময়দান নেতাকর্মিদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। আছর নামাজের আগেই পুরো মাদরাসা ময়দান কানায় কানায় পূর্ন হয়ে যায়। মাঠে লোক সমাগম না হওয়ায় অনেকেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে জামায়াত নেতাাদের বক্তব্য শুনেছেন। দলীয় নেতাকর্মির পাশাপাশি অসংখ্য সাধারন মানুষকে গণজমায়েতে অংশ নিতে দেখা গেছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেজামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এসময় নেতাকর্মিরা স্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।গণজমায়েতে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া পূর্ব জেলার নায়েবে আমির অধ্যাপক আব্দুল বাছেদ, সেক্রেটারি মাওলানা মানছুরুর রহমান, জেলা শুরা সদস্য এ্যাড. আব্দুল হালিম, উপজেলা জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল মুস্তাফিধনাসিম, সাবেক ছাত্রনেতা শাহিন আলম, ইসলামী ছাত্রশিবির শেরপুর শহর শাখার সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রবিন, শেরপুর উপজেলা উত্তরের সভাপতি রাফিউজ্জামান, দক্ষিন সভাপতি নাজমুস সাকিব সুজন প্রমূখ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *