চট্টগ্রাম অফিস : অস্ত্র-গ্রেনেডসহ আটক জামায়াতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার মোহাম্মদ জাবেদ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে গ্রেনেড বিস্ফোরণে তিনি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগর এলাকা থেকে গ্রেনেড ও অস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) বাবুল আক্তার জানান, জেএমবি নেতা জাবেদ স্বীকারোক্তিতে জানায় বায়েজিদ বোস্তামি থানার অনন্যা আবাসিক এলাকায় তাদের আরও একটি গোপন আস্তানা আছে। ভোরে নগরীর অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কের অনন্যা আবাসিক এলাকায় তাকে নিয়ে অভিযানে যায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই আস্তানা থেকে আরও একটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়ে জাবেদসহ তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জাবেদকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেনেড বিস্ফোরণে আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন—গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ ইলিয়াছ, এসআই লিয়াকত হোসেন ও কনস্টেবল মো. ফয়সাল। আহত পুলিশ সদস্যদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত জাবেদ জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য ছিলেন বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক আবদুল হামিদ জানান, সকালে জেএমবি কমান্ডার জাবেদকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার জানান, সোমবার সকালে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে প্রথমে নগরী থেকে জেএমবি সদস্য মাহবুব ও সোহেল নামে দুই যুবককে আটক করা হয়। পরে তাদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানার কথা স্বীকার করে। এরপর রাতে তাদের নিয়ে কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগরে আস্তানায় অভিযান চালানো হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার আরও জানান, তারা জনবহুল খোয়াজনগর আজিমপাড়া নূর আহাম্মদ টাওয়ারের নিচতলায় বাসা ভাড়া নিয়ে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তুলেছিল। পুলিশের অভিযানে সময় ঘরের ভেতরে থাকা জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পুলিশ দ্রুত ঘরে থাকা তিন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করে। এরা হলো জেএমবি প্রধান জাবেদ (২৪), সুজন প্রকাশ বাবু ও বুলবুল আহাম্মেদ। গ্রেফতার কমান্ডার জাবেদের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়। তিনি সম্প্রতি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছে। জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৯টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১২০ রাউন্ড গুলি, একটি পিস্তল, ১০টি ছুরি এবং বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম।