সবিতা রানী, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া জেলার “শেরপুরে” শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে কথিত তিন সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এ সময় তাদের নিকট থেকে একাধিক পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।গত সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর/২৪,দুপুরে উপজেলার শুবলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে শেরপুর থানায় তাদের নামে একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। ঘটনার সময়ে চাঁদাবাজ চক্রের আরও চার সদস্য কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।আটক ব্যক্তিরা হলেন, জেলার গাবতলী উপজেলার মারিয়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আব্দুল হালীম (৪০), বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি গ্রামের রোস্তম সেখের ছেলে মোক্তার শেখ (৩৯) ও শেরপুর শহরের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লার সিরাজ উদ্দিন খানের ছেলে রায়হান পারভেজ কমল (৩৯)। এছাড়া শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী ঘুটুবটতলা গ্রামের মাসুদ রানাসহ (৩০) অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।মামলা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার দুপুরে উপজেলার হুসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেন তারা। এরপর প্রধান শিক্ষক উম্মে কুলসুমের নিকট পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তার স্কুলের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পত্রিকায় ছাপানোসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন। একপর্যায়ে ওই প্রধান শিক্ষক তাদেরকে ১ হাজার টাকা দেন। এরপর পাশের শুভ কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে সিএইচসিপি মাসুদ রানার কাছে বিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তাকেও একই হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। পরে মাসুদ রানা তাদেরকে ১ হাজার পাঁচশ টাকা প্রদান করেন। পাশাপাশি ওই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী জাহানারা বেগমের নিকট দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। মানহানির ভয়ে তিনি তাদেরকে ৫ হাজার টাকা দেন।পরদিন সোমবার দুপুরে শুভলি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে একই কায়দায় প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলামের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে এই শিক্ষক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় বাধে। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তখন কথিত সাংবাদিক আব্দুল হালীম, মোক্তার হোসেন ও রায়হান পারভেজ কমলকে আটক করে গণধোলাই দেন তারা। এ সময় মাসুদসহ অন্যান্যরা কৌশলে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে যায়।শেরপুর থানার ওসি এসএম রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মঙ্গলবার দুপুরেই বগুড়ায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি