মৃত্যুর ৩ ‍দিন আগেই পৃথিবীকে বিদায় বলেন সাংবাদিক সারাহ

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে রাহানুমা সারাহ (৩২) নামে এক নারী সাংবাদিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে মৃত্যুর ৩ ‍দিন আগেই পৃথিবীকে বিদায় বলেন সাংবাদিক সারাহ। ফেসবুকে ইংরেজিতে একটা স্ট্যাটাস দেন, যার অর্থ এমনটা আসে, ‘প্রিয় সারাহ রাহনুমা,

এখন বিদায় বলার পালা। যাত্রা দীর্ঘ হয়েছে, তবে ভালোও হয়েছে। আপনার প্রচেষ্টা যথেষ্ট হয়েছে। আপনার এখন কিছু করার ক্ষমতা নেই। তুমি সব হারিয়েছ। যাইহোক, আমি আপনার জন্য গর্বিত। আপনি এখন আরাম করতে পারেন এবং সর্বদা নিজের সাথে একা থাকতে পারেন। এটাই সবচেয়ে ভালো নীরব থাকা এবং নিজের সাথে কথা বলা। আপনার বায়ুরন্ধ্র খোঁজা উচিত নয় কারণ এটি আপনার জন্য উপযুক্ত নয়। নিশ্চিত করুন যে সবকিছু চলছে। শুধু নিজের সাথে একা থাকতে পারদর্শী হয়ে উঠুন। আপনার সীমা জানা গুরুত্বপূর্ণ। ভালো থাকুন।’

এদিকে বুধবার বেলা ১১টার ১১ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের লোকেশন দিয়ে ফাহিম ফয়সালের সাথে সারাহ তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সারাহ এই স্ট্যাটাসটাও ইংরেজিতে দেন, যার অর্থ এমনটা আসে, ‘আপনার মতো একজন বন্ধু পেয়ে ভালো লাগলো, ঈশ্বর আপনাকে সর্বদা আশীর্বাদ করুন। আশা করি আপনি শিগগিরই আপনার সমস্ত স্বপ্ন পূরণ করবেন, আমি জানি আমরা একসাথে অনেক পরিকল্পনা করেছি। দুঃখিত আমাদের পরিকল্পনা পূরণ করতে পারিনি, ঈশ্বর আশীর্বাদ করুন।’

এছাড়া এই স্ট্যাটাসের আরো ১ ঘণ্টা আগে অন্য আরেকটি স্ট্যাটাসে সারা লিখেন, ‘জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভাল।’

সারাহ জি-টিভির নিউজরুম এডিটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি কল্যাণপুরে থাকতেন বলে জানা গেছে। সারাহ নোয়াখালী সোনাইমুড়ী উপজেলার ইসলামবাগ কৃষ্ণপুর গ্রামের বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে উদ্ধার করে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে সারাহর স্বামী সায়েদ শুভ্র বলেন, ‘আমরা সম্পর্কের মাধ্যমে সাত বছর আগে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম। গতকাল সারাহ অফিসে গিয়ে রাতে আর বাসায় না ফিরে একজনকে দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসা ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিল। পরে আমি তাকে ফোন করে বলি, রাতে তো তুমি বাসায় আসতে তাহলে অন্যকে দিয়ে কেন টাকা পাঠিয়ে দিয়েছ? তখন সে ব্যস্ততার কথা বলে ফোন রেখে দেয়।’

তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, তবে বেশ কিছুদিন আগ থেকে আমার স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চাচ্ছে। আমরা দু’জনই কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে আসব। দেশের এই পরিস্থিতিতে আর কাজী অফিসে যাওয়া হয়নি।

এদিকে রাহানুমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সাগর বলেন, হাতিরঝিল লেকের পানিতে ভাসমান অবস্থায় ওই নারীকে দেখতে পাই। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা লাশটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রেখেছি। ঘটনাটি হাতিরঝিল থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *