বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ঘিরে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শোক জানাতে যাওয়া ব্যক্তিদের ফোন চেক ও তাদের মারধর করার মতো অভিযোগও রয়েছে। এক ব্যক্তিকে প্রায় নগ্ন করে নাচতে বাধ্য করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এসবের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ জড়িত কি না সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এর সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ সহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, যা আমাদের গণ অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সাথে যায় না। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে শোক প্রকাশে ঘটে যাওয়া বিতর্কিত কাজ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
আজ (শুক্রবার) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে ১৫ আগস্টের বিভিন্ন ঘটনা ও সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ কথা জানান তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ১৫ আগস্ট ধানমন্ডিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। কেউ যদি ১৫ আগস্ট ধানমন্ডিতে ফুল দিতে চায় তাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাধা দিতে পারে না। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলার অধিকার কারও নেই। তাই এসবের সঙ্গে সমন্বয়ক বা অন্য কেউ জড়িত থাকলে বহিষ্কার এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাইরের রাষ্ট্রে থেকে সে রাষ্ট্রের মদতে প্রতি বিপ্লবের চেষ্টা চালাচ্ছে। যদি এই বিপ্লব হয়েই যেতো তাহলে তা ছাত্র-জনতার বিপক্ষে গিয়েই হতো। ১৫ আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ছদ্মবেশে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। তারা যেন প্রতিবিপ্লব করতে না পারে সেজন্যই আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছিলাম।
সারজিস বলেন, ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ পুলিশের মাধ্যমে হেজাফতে ইসলামের সমাবেশের সময় কান ধরে ওঠবস করানোর সংস্কৃতি শুরু করেছিল। তবে গতকাল ১৫ আগস্ট কান ধরে ওঠবস করানো ও মোবাইল চেক করাসহ ঘটে যাওয়া কিছু কাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ব্যক্তিগতভাবে চাইলে যেকেউ শোক পালন করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয় আয়োজনে শোক দিবস পালনের পক্ষে না। তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে শোক প্রকাশ করতে চাইলে তাকে সম্মান জানাতে হবে।’
১৫ আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগ যেন ঢাকায় অবস্থান নিতে না পারে বা প্রতিবিপ্লবের মতো কিছু ঘটাতে না পারে, সেজন্য বৃহস্পতিবার ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সকাল থেকে ধানমন্ডি ৩২ ও এলাকার আশপাশে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। ওই সড়কে কেউ যেতে চাইলে ছাত্ররা তল্লাশি করে, মোবাইল চেক করে দেখেছেন। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা পেলেই পড়তে হয়েছে মারধরে মুখে, পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।