বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হতে পারে ভারতেও

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের নেতা সালমান খুরশিদ বাংলাদেশের মতো অভ্যুত্থান ভারতেও ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। বুধবার এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কংগ্রেস নেতা এই মন্তব্য করেছেন। তার এই মন্তব্য ঘিরে দেশটিতে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

সালমান খুরশিদ বলেন, কাশ্মিরে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হতে পারে। এখানে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হতে পারে। আমরা হয়তো বিজয় উদযাপন করছি। যদিও কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, সেই বিজয় বা ২০২৪ সালের সাফল্য খুব বড় ছিল না। সম্ভবত আরও অনেক কিছু করা দরকার। তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো সেখানে কিছু আছে।

এরপর তিনি বলেন, ‘‌‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তা এখানেও ঘটতে পারে। আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে যেভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেই একই বিষয়ের বিস্ফোরণ ঘটেছে বাংলাদেশে। এখানেও বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’’

বিজেপি নেতারা সালমান খুরশিদের ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং তাকে ‘‘নৈরাজ্যবাদী’’ নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা। বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেছেন, কংগ্রেস পার্টি বলেছে, বাংলাদেশের ইস্যুতে তারা ভারত সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। কারণ এটি কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয় এবং এটি নিয়ে কোনও রাজনীতি করাও উচিত নয়। তবে তাদের নেতা সালমান খুরশিদ ভারতের জনগণকে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিজেপি দলীয় সংসদ সদস্য সাংসদ সম্বিত পাত্র রাহুল গান্ধীর বিদেশ সফরের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, খুরশিদের মন্তব্য রাহুল গান্ধীর বিদেশ সফরের পেছনের ‘‘আসল উদ্দেশ্য’’ প্রকাশ করেছে।

পাত্র বলেন, ‘‘একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সালমান খুরশিদ ওই মন্তব্য করেছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারতেও বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ শুরু হতে পারে। বাংলাদেশে যা হয়েছে তা ভারতেও হতে পারে। শশী থারুরসহ আরও অনেক নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা একভাবে সেই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।’’

বিজেপির এই নেতা রাহুলের বিদেশ সফরের বিষয়ে বলেন, রাহুল গান্ধী যখনই বিদেশে যান, তখনই গোপনে অনেকের সঙ্গে দেখা করেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এখন আমরা জানতে পাচ্ছি তার উদ্দেশ্য কী।

কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বাংলাদেশের বিষয়ে সালমান খুরশিদের মন্তব্যের বিষয়ে বলেছেন, কী বোঝানোর জন্য এমন মন্তব্য করেছেন তা আমি ব্যাখ্যা করতে পারবো না। তবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণতন্ত্রের গুরুত্ব এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বৃহত্তর বার্তা দিয়েছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে তৈরি হওয়া প্রবল চাপের মুখে সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। পদত্যাগ করার পরপরই বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে গেছেন তিনি। বর্তমানে ভারতে অবস্থান করলেও বিশ্বের কয়েকটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের সরকারের পক্ষ থেকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকার শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করে দিয়েছে।

বুধবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু বলেছে, দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইউরোপের দেশে ফিনল্যান্ডে আশ্রয় চাইতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *