সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলন রাজনীতির আগুন পেয়ে সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার পর সরকার থেকে নম্রতা দেখানো হলেও বিক্ষুব্ধদের দাবি ততদিনে আর কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা আসার পর আজ (রোববার) প্রথম দিনেই রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গোটা দেশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শুধু আজই সারা দেশে শিক্ষার্থী, পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষসহ ৮৫ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের ডাকে শুরু হওয়া আন্দোলন ঘিরে আজ দিনভর উত্তপ্ত ছিল দেশের বেশিরভাগ জেলা। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমে সংঘর্ষে জড়িয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা আজকের কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতে পুলিশ ছাড়াও গুলি ছুড়তে দেখা গেছে অস্ত্রধারীদের।
দেশজুড়ে বিভিন্ন সড়ক অবরোধের পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা ভাঙচুর চালিয়েছেন বেশ কটি পুলিশ বক্সে। আগুন দেওয়া হয়েছে থানায়, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের পর এ দফায় জুলাইয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন গতকাল পর্যন্তও ছিল ৯ দফা আন্দোলন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসমুদ্র থেকে গতকাল তা সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে এসে ঠেকে। সেই সঙ্গে ডাক দেওয়া হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের। এ কর্মসূচিরই প্রথম দিন ব্যাপক সংঘাত-সংঘর্ষ দেখলো গোটা দেশ। এদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে সরকার পতনের এ আন্দোলন ছাত্রদের নয়, এটি বিএনপি-জামায়াতের।
মূলত জুলাইয়ের শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এর মধ্যেও ১৮ ও ১৯ জুলাই পরিস্থিতি ছিল বেশি খারাপ। বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ভবন, সেতু ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। প্রাণহানিও হয় বহু মানুষের; যাদের বেশিরভাগই নিহত হয় গুলিতে। ১৯ জুলাই মধ্য রাত থেকে সারা দেশে জারি করা হয় কারফিউ। পাশাপাশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। সেনা মোতায়েনের পর সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও আজ আবার বড় ধরনের সহিংসতা দেখা গেল।
রণক্ষেত্র ঢাকা, বন্ধ ফেসবুক-টুইটার, অনির্দিষ্টকালের কারফিউ
শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা আসার পর রোববার ঢাকার সকাল শুরু হয় আতঙ্ক নিয়ে। চাপা ভয় নিয়েই সকালে ঘর ছাড়ে মানুষ। এরপর শাহবাগ এলাকা থেকে শুরু হয় সহিংস ঘটনা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভেতরে থাকা অন্তত ৫০টি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।
প্রায় একই সময়ে পুরান ঢাকায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের গেট ভেঙে আন্দোলনকারীরা ভেতর প্রবেশ করে পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
সকালের দিকে মিরপুরের রাস্তাঘাট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দখলে নিলেও তা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। উত্তরাতেও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে দাঁড়াতে পারেননি আওয়ামী লীগের কর্মীরা। পরে অবশ্য পুলিশ আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুখোমুখি পরিবেশ তৈরি হয়।
দুপুরে কারওয়ান বাজারেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এলিফেন্ট রোডের বাটা সিগন্যাল ও সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বেশ কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন বেশ কজন।
এসবের মধ্যে ঢাকায় মোবাইল ইন্টারনেট ও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ কয়েকটি অ্যাপ বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে সারা দেশে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে কারফিউয়ের সময় এগিয়ে আনার ঘোষণা দেয় সরকার। দুপুরে জানানো হয় রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় শহর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হলো। সোমবার থেকে তিনদিনের সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়।
দেশজুড়ে প্রাণহানি
দিনভর সংঘাতে ঢাকায় অন্তত সাতজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ ১৭ জন, ফেনীতে আটজন, রংপুরে চারজন, নরসিংদীতে ছয়জন, লক্ষ্মীপুরে চারজন, বগুড়ায় চারজন, পাবনায় তিনজন, শেরপুরে তিনজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে দুইজন, কুমিল্লায় দুইজন, মাগুরায় একজন, বরিশালে একজন ও জয়পুরহাটে একজনের মৃত্যুর তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রাজশাহীতে মোহনপুরে থানার সামনে কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলায় অন্তত ১৩ জন পুলিশ প্রাণ হারান।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবির সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কুমিল্লার দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন।
ফেনীতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এতে আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক ব্যক্তি।
পাবনায় সহিংসতায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বগুড়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা ও তার ভাগনেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ফরিদপুর ও কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। দুটি কার্যালয়ের বাইরে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মাগুরায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহতও হয়েছেন।
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট, লালদিঘী, জুবলি রোড এবং পটিয়া উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীদের সঙ্গে তখন পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় মেয়রের বাড়ির পাশে থাকা বহদ্দারহাট-নতুন চান্দগাঁও সড়কের বাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে মো. শহীদ (৪৫) নামে একজন নিহত হন।
মুন্সীগঞ্জ শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হন।
এছাড়া আরও কিছু জেলাতেও বড় ধরনের সংঘাতের তথ্য পাওয়া গেছে।
নতুন কর্মসূচি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি একদিন এগিয়ে সোমবার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ নিজের ফেসবুক আইডিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এটি মঙ্গলবার হওয়ার কথা ছিল।
নতুন কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে তিনি লেখেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগস্ট করা হলো। অর্থাৎ আগামীকালই সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আসিফ লেখেন, আজ প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতাকে খুন করা হয়েছে। চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলো থেকে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিয়ে সবাই ঢাকায় আসবেন এবং যারা পারবেন আজই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোতে অবস্থান নিন।
নৈরাজ্যবাদীদের কঠোর হাতে প্রতিহতের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর হস্তে নৈরাজ্যবাদীদের দমন করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা এখন সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের কেউই ছাত্র নয়, তারা সন্ত্রাসী।
সারওয়ার আরও জানান, নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
যা বলছে আওয়ামী লীগ
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনগুলোতে সাধারণত দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই কথা বলেন। তবে আজ কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে নানক বলেন, সরকার পতনের এক দফা দাবি বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রকারীদের। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহল্লায় কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি, সব হত্যা ও সহিংসতার দায় আন্দোলনকারী নেতৃত্বকেই নিতে হবে। দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবেন না, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাই, ছাত্র সমাজের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সরকার তাদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ছাত্র সমাজের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশের কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-আপামর জনগণ মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা শেষ কথা বলতে চাই, বিএনপি-জামায়াত, শিবির-জঙ্গি গোষ্ঠীর নির্দেশে… আমরা এ দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে ধৈর্যের শেষ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। ধৈর্য ও সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এ জঙ্গিগোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
সমাধানের পথ কী
যারা আন্দোলন করছেন তাদের এখন এক দফা দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বলে আসছে এ দাবি ছাত্রদের নয়, বরং তা তাদের রাজনৈতিক বিরোধী জোট বিএনপি-জামায়াতের। বিএনপি বলছে, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা আপামর জনসাধারণের উত্থাপিত এক দফা ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছে।
গতকাল শিক্ষার্থীদের এক দফা ঘোষণা আসার আগে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে তাদের সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। আজকের সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী অনড় দুই পক্ষের মাঝে এখনও সমাধানের কোনো পথ নেই। পরিস্থিতি কার্যত দুপক্ষের জন্য ‘ডু অর ডাই।’
এরশাদপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে সাধারণত বড় সংঘাতময় পরিস্থিতিগুলো সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে। সেসব ক্ষেত্রে সংকট সমাধানে কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপসহ দেশের সুশীল সমাজেরও প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকে। তবে নতুন দিনে, নতুন আশায় নতুন এক প্রজন্মের হাত ধরে তৈরি হওয়া এবারের আন্দোলন যেমন অচেনা, তেমনি অজানা এর পরিণতি।