অবৈধ আয়ে প্রকৌশলী স্বামীর চেয়ে এগিয়ে কর-কর্মকর্তার স্ত্রী

Slider বাংলার মুখোমুখি

কবির আহমেদের স্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সহকারী পরিচালক বদরুন নাহার। তার বিরুদ্ধেও অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলেছে। তবে, প্রকৌশলী স্বামীর চেয়ে তিনি বেশ এগিয়ে। দুদকের অনুসন্ধানে বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনসহ সাত কোটি সাত লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

স্বামী-স্ত্রী দুজনেই এখন দুর্নীতির মামলার আসামি। সোমবার (১ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা- ১ এ সংক্রান্ত মামলা দুটি দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদ তার সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৫১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য ঘোষণা করেন। ২০১৪-১৫ করবর্ষ থেকে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত তিনি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮৯ টাকা পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করেছেন। সমুদয় ব্যয়সহ তার নামে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ৬৬ হাজার ৫৪০ টাকা। এর মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানে আসামির পক্ষে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় এক কোটি ৯১ লাখ ৭৫ হাজার ৮১২ টাকা।

অর্থাৎ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদ মোট এক কোটি আট লাখ ১০ হাজার ৭২৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অন্যদিকে, তার স্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (গবেষণা ও পরিসংখ্যান উইং) সাবেক সহকারী পরিচালক বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে ৯৭ হাজার ৬৬৩ টাকা সম্পদের ভিত্তিহীন অর্থাৎ মিথ্যা তথ্য প্রদানের প্রমাণ এবং পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অপর মামলা দায়ের করেছে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এনবিআরের সাবেক এ কর্মকর্তা এক কোটি ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ৬৬৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তার সম্পদের বিবরণী তলব করে দুদক। আসামি ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর তার সম্পদের বিবরণী দুদকে দাখিল করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসামির নিজ মালিকানাধীন বনশ্রী, এফ ব্লকে ক্রয় করা ৩.৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত ছয়তলা বিশিষ্ট বাড়ি রয়েছে। যার নির্মাণব্যয় প্রদর্শন করেছেন ৮০ লাখ ৯৫ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু বাড়িটি প্রকৌশলী দিয়ে পরিমাপ করে নির্মাণব্যয় পাওয়া যায় দুই কোটি ১১ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৩ টাকা। এ ক্ষেত্রে আসামি এক কোটি ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ৬৬৩ টাকার নির্মাণব্যয়ের তথ্য গোপন করেছেন।

এ ছাড়া আসামি বদরুন নাহার তার সম্পদ বিবরণীতে আট কোটি ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৬ টাকা মূল্যের সম্পদ প্রদর্শন করেন। যার মধ্যে মাত্র দুই কোটি ৩৯ লাখ ৭২ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সুতরাং তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৬ টাকা।

সবমিলিয়ে বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে সাত কোটি সাত লাখ ৫৭ হাজার ৪৯৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে মামলায় দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *