ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে দেশের ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে, তৃতীয় ধাপের ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এক লাখ ৪০ হাজার ৮৬১ জন সদস্য মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। এছাড়া সারাদেশে ৩০০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর নির্বাচনে কেউ ভোট বেশি দেখালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, এক শতাংশ ভোট পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। ভোটার যা আসবে তাই। আমাদের কঠোর নির্দেশ যে ভোটার যদি একজন আসেন একজনই দেখাতে হবে। ৫০ জন আসলে ৫০ জনই দেখাতে হবে। কেউ যদি বেশি দেখায় আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।
ইসি জানায়, এই ধাপে ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সোমবার ১৯টি এবং মঙ্গলবার ৩টি উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে কমিশন। ফলে বুধবার ৮৭টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
স্থগিত হওয়া উপজেলাগুলো হলো— বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, পটুয়াখালী সদর, দুমকী, মির্জাগঞ্জ, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঠালিয়া, বরগুনার বামনা ও পাথরঘাটা এবং রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা, নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী এবং চাঁদপুর জেলার কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া খালিয়াজুরী উপজেলায় সড়ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন ঘটা এবং কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইভিএমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই ধাপে ১ হাজার ১৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত, অর্থাৎ ২৮ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৯ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসি। ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে নামানো হয়েছে বিজিবি ও পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচন অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনায় মাঠে রয়েছেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও আচরণ বিধি প্রতিপালনে মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত বিভিন্ন টিমের বিষয়ে ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স টিম ও অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন এবং উক্ত টিমসমূহের কার্যক্রম নির্ধারিত তিন দিন পর পর বা ক্ষেত্রমতো তাৎক্ষণিক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা টিমসমূহ কর্তৃক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবগত করানোর জন্য নির্দেশনা দেবেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাচনের সামগ্রিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।