বাংলাদেশ-ভারতে রেমালের তাণ্ডব, এলাকা প্লাবিত, নিহত ১০

Slider সারাদেশ


ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার রাত ৮টা নাগাদ সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্যে মংলার দক্ষিণ পশ্চিম দিক দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ে। এই পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রেমালের ফলে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা-সহ বাংলাদেশের উপকূলের জেলাগুলোতে প্রবল গতিতে হাওয়া বইতে শুরু করে। তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়।

বরগুনার আমতলীতে জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙে গেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, রেমালের তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন জায়গায় প্রবল বষ্টি হচ্ছে।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাড়ি থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে ৬৫ বছর বয়সী শওকাত মোড়ল নামের এক ব্যক্তি মারা যান। গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এছাড়া জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে ২৪ বছর বয়সী শরীফুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।

বরগুনার তিনটি নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পরশুনিয়ার বাঁধ ভেঙে গেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাঁধের উপর দিয়ে পানি বইছে। কক্সবাজারে জোয়ারের পানিতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় সকালে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা

পশ্চিমবঙ্গেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাঁধ ভেঙেছে। প্রবল জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। কলকাতায় রাতে ঝোড়ো বাতাস বয়েছে এবং প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সকালেও বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখাতেও ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।

রেমাল দুর্যোগে কলকাতায় ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সাজিব নামে ওই ব্যক্তির ছেলে বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আইপিএল ফাইনাল দেখছিলেন। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হএয়ার পর তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে যান তিনি।

বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় এন্টালির বিবির বাগানে তিনি একটি বাড়ির নিচে আশ্রয় নেন। তখনই তার উপর বাড়ির কার্নিশ ভেঙে পড়ে ও তার মৃত্যু হয়।

সোমবার সকালে বৃষ্টি একটু কমলেও কলকাতার অনেক রাস্তায় পানি জমে আছে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, মোট ৫২টি গাছ পড়েছে। কয়েকটি রাস্তায় পানি জমে আছে। এখন বৃষ্টি কমলেও পরে আবার হতে পারে। ক্যামাক স্ট্রিটে একটি পাঁচিল ভেঙেছে।

কলকাতা থেকে ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি গৌতম হোড় জানাচ্ছেন, রোববার বিকেল থেকেই কলকাতায় বৃষ্টি শুরু হয়। রাত যত বাড়ে ততই বৃষ্টির দাপট বাড়ে। শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া। রাত ১০টার পর থেকে ঝড় ও বৃষ্টি প্রবল হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডব চলতে থাকে। সোমবার সকালেও আকাশ পুরো মেঘলা। ঝোড়ো হাওয়া থেমেছে। তবে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এখন ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে রেমাল। তবে রেমালের প্রভাবে কলকাতায় ১৪৪ মিলিমিটার, ডায়মন্ড হারবারে ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রেলামের তাণ্ডব ছিল সবচেয়ে বেশি। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড় হয়। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়েছে। বাড়ি ভেঙেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *