অব্যাহত বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এটি উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার কাছে অবস্থান করছে। আগামী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই এটি দুর্বল হয়ে পড়বে বলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সোমবার তাদের ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়রটির কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ কিলোমিটার। তবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে তা ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
এতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর; কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের বিপদ এখনো কাটেনি। বরং আরো শক্তিশালী হচ্ছে। এমন তথ্যই জানিয়েছেন কানাডাভিত্তিক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি দিবাগত রাত সোয়া ২টায় তার ফেসবুকে যে আপডেট দিয়েছেন, সে অনুযায়ী রেমালের মধ্যে বজ্রপাত হচ্ছে। আর এতে বোঝা যাচ্ছে যে ঘূর্ণিঝড়টি আরো শক্তিশালী হচ্ছে।
পলাশ জানান, প্রকাশিত নিচের ছবিতে বজ্রপাতের দুটি লাইন নির্দেশ করা হয়েছে, যার একটি চট্টগ্রাম বিভাগের দিকে এবং অন্যটি বরিশাল বিভাগের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এই লাইনের নিচে ভারী থেকে খুবই ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টি ৩ থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে
এর আগে বিবিসির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত হেনেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের ‘আই’ (চোখ) বা মূল কেন্দ্রটি। রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা নাগাদ এটি আঘাত হানে, যদিও ওই সময় সাগরে ভাটা থাকায় তেমন বড় কোনো জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়নি।
তলিয়ে গেছে সুন্দরবন
এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিসহ দমকা বাতাস শুরু হয়। এর প্রভাবে সকাল থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে সুন্দরবন।
সকাল ৮টা থেকে জোয়ার শুরু হয়ে দুপুর দুইটা পর্যন্ত জোয়ার হওয়ার কথা থাকলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত পানি বাড়তে শুরু করে।
দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ওসি আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ফুট পানি বেড়ে সুন্দরবন তলিয়ে গেছে। পানির চাপ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পুরো সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে থাকা বনরক্ষীদের এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।’
সুন্দরবনের এই কর্মকর্তা জানান, করমজল বন্যপ্রাণী কেন্দ্রে এরই মধ্যে যেসব প্রাণী রয়েছে সেগুলো কিছুটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এরই মধ্যে মোংলা বন্দরে পন্য ওঠানামা বন্ধ রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পণ্যবাহী ৬টি জাহাজকে রাখা হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে।