জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১০ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট নিয়ে পেয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। আগের দুই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লজ্জাজনক হারের পর এমন কিছুই দরকার ছিল বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে।
মুস্তাফিজ সেই আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া দিলেন। পরে ব্যাট হাতে নেমে তানজিদ তামিম আর সৌম্য সরকার খেললেন চোখে ধাঁধানোর মতো ইনিংস। মুস্তাফিজের দিনে বাংলাদেশকে তাই আর লজ্জায় পড়তে হয়নি। ৯ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো টাইগাররা।
দলে স্বীকৃত ওপেনার তিনজন। তিনজনকেই আজ মূল একাদশে নামিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ওপেনার হিসেবে খেললেন তানজিদ হাসান তামিম আর সৌম্য সরকার। ১০৫ রানের টার্গেটে খুব একটা আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের দরকার ছিল না। দুই ওপেনার সেই পথে যাননি।
তবে প্রয়োজনমতো ব্যাট চালিয়েছেন জুনিয়র তামিম এবং সৌম্য। তামিমই একটু আগ্রাসী ছিলেন বেশি। তবে সৌম্য নিজেও কম যাননি। পাওয়ার প্লেতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ তুলেছে ৪৮ রান।
প্রথম ওভারে তানজিদ তামিমের দুই চার, আর তৃতীয় ওভারে সৌম্য সরকারের ১ চার ও ১ ছয়। বাংলাদেশ ইনিংসের উড়ন্ত সূচনার জন্য এটুকুই যেন ছিল যথেষ্ট। আগের দুই ম্যাচে ওপেনাররা করেছেন চরম হতাশ। আজ সেই ক্ষতে হালকা একটা প্রলেপ দিয়ে গেলেন দুজনে।
১১তম ওভারে নিজের ফিফটি করেন তানজিদ তামিম। ৫ চার আর ২ ছয়ে সাজান নিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ফিফটির ইনিংস। পঞ্চাশের পরেও অবশ্য থামেননি। ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন। জুনিয়র তামিমের রান ৫৮। আর চার মেরে জয় এনে দেওয়া সৌম্য অপরাজিত ছিলেন ৪৩ রানে।
এর আগে মুস্তাফিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের সুবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বল হাতে আধিপত্য দেখিয়েছিল বাংলাদেশ।
নতুন বলে তানজিম হাসান সাকিব এবং সাকিব আল হাসানের হতশ্রী বোলিংয়ে অবশ্য বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হাসান মাহমুদকে দুই চার মেরে শুরু করেন শায়ান জাহাঙ্গীর। পরের ওভারে সাকিবের বলে ছক্কা হাঁকান গোজ।
৬ষ্ঠ ওভারে ফিজ বোলিংয়ে আসার আগ পর্যন্ত মলিনই ছিল বাংলাদেশ। তবে সেই ওভারে মুস্তাফিজের উইকেট মেইডেন ম্যাচে ফেরায় টাইগারদের। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটাররা খানিক সাবধান হতে চাইলেও তা কাজে আসেনি।
নবম ওভারে রিশাদের মেইডেন। পরের ৪ ওভারে এসেছে ৮ রান। যুক্তরাষ্ট্র তাতে উইকেট হারায় ৩টি। দশম ওভারে মুস্তাফিজ পান নিজের ৩য় উইকেট। এরপর তানজিম সাকিবের হাত থেকে আসে আরেকটি উইকেট, মেইডেন ওভার।
কোরি অ্যান্ডারসনের ১৮ বলে ১৮ আর শ্যাডলি ভ্যান শ্যালউইকের ১৭ বলে ১২ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ রান পেরুনোর পুঁজি। তাদের দুজনকেই ফেরান ফিজ। তানজিম পেয়েছিলেন অধিনায়ক অ্যারন জোনসের উইকেট। ক্যাচ নিয়েছিলেন রিশাদ। শেষ ওভারে জাসদ্বীপ সিং এবং নিসর্গ প্যাটেলের উইকেট নিয়ে ৬ উইকেট পূরণ করেন মুস্তাফিজ। ১০৪ রানে অলআউটের পর দুই ওপেনার মিলে নিশ্চিত করেন মান বাঁচানোর জয়।