পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আজ শনিবার দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রামে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
এ বৃষ্টি আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে।
নিম্নচাপটি বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে বঙ্গোপসাগর।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আজ সন্ধ্যা থেকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পড়তে শুরু করবে। আর মধ্যরাত থেকে পুরোপুরি প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে। সেজন্য সমুদ্র বন্দরসমূহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরো ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।
এদিকে, শনিবার (২৫ মে) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৫ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
এদিকে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তা আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র হয়তো চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ও বান্দরবন জেলার উপরে দিয়ে অতিক্রম করবে না তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্টি হওয়া ডান দিকের বহিঃস্থ বৃষ্টি বলয়ের পুরোটাই চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আগামী তিন দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি ঘটানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় পাহাড় ধ্বসেরও ঝুঁকি রয়েছে।