ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার জন্য গিয়ে পরিকল্পিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা ঘিরে রহস্য আরো জমাট বাঁধছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ মে নিউটাউনের আবাসনেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় আনারকে। খুনের পর টুকরো টুকরো করে কাটা হয় মরদেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিন ধরে খণ্ডিত অংশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। কিছু অংশ ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা হয়। এমনকি ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেই খণ্ডিত অংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছে। তবে কারা ফেলেছে, কোথায় ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, এই ঘটনায় একটি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। গাড়িটির নম্বর WB18 AA 5473। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। এর পরই গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই গাড়িটিকে আনা হয় নিউটাউন থানায়। উদ্ধার হওয়া গাড়ি থেকে ফরেনসিক এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেন।
হত্যা করা হয়েছে এমন আলামত পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহের পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড কে? আরও কারা জড়িত? এসবের প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছে কলকাতা পুলিশ।
তবে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত একটি নাম এসেছে জোরালোভাবে। তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান শাহিন, কলকাতায় এসেছিলেন আমেরিকার পাসপোর্ট ব্যবহার করে। এই আখতারুজ্জামানই কলকাতায় এক লাখ রুপিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন এক বছর আগে।
পরিকল্পিতভাবে খুন করে কলকাতা ছেড়ে বাংলাদেশ হয়ে ইতোমধ্যে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একাংশ।
এমপি আনারের হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বাংলাদেশের তিনজন ও কলকাতায় একজনকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন বাংলাদেশ ও কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা। তবে সেই মূল পরিকল্পনাকারী শাহিন আটক নাকি সত্যিই পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি দুই দেশের পুলিশ।