সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশ এই মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আমাদের রাজস্ব বাড়েনি, সরকারের খরচ বাড়ানোর কোনো অবস্থা নেই। এমনকি বিদেশি ঋণ পরিশোধ করার মতো অবস্থাও নেই সরকারের।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি ও এফবিসিসিআই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা থাকবে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা থাকবে। গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রাধান্য পাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকার সমস্যা দূর করার জন্য সরকারের নেওয়া লক্ষ্য ও কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশনাও থাকবে আসন্ন বাজেট প্রস্তাবনায়।
প্যানেল আলোচনায় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গত ১০ বছরে ব্যক্তি পর্যায়ে রাজস্ব সেভাবে বাড়েনি। এখনও যদি করোনার কথা বলেন, তাহলে অর্থনীতির বিবেচনায় ঠিক হলো না। আমাদের সঙ্গে অনেক সময় আইএমএফের মিলবে না। তবে মূল্যস্ফীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়ে দেশীয় অর্থনীতিবিদরা একটা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের হিসাব যদি ধরেন, তাহলে এত জটিল আর্থিক পরিস্থিতি হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। এই জটিল আর্থিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে। সেটা আপনি পণ্য মূল্যই বলেন আর বাজারে মন্দার কথাই বলেন।
দেবপ্রিয় বলেন, পৃথিবীতে এখন যে ধরনের রাজনীতি হচ্ছে তার ফলে আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতি এবং ভূ-কৌশলগত বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। এবারের বাজেট অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির ভেতরে আসছে। তাই এই বাজেট অন্য যে কোনো বছরের থেকে কঠিন হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আইএমএফএর সঙ্গে একটি শর্তযুক্ত ঋণের মধ্যে রয়েছে। সব প্রতিশ্রুতি প্রতিপালন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে জনবান্ধব করতে স্টেকহোল্ডারদের দেওয়া প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে। পাশাপাশি বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাগুলোতে সক্ষমতা বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বাজেট তৈরির আগে বিভিন্ন মহল থেকে অনেক প্রস্তাবনা আসে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ চিন্তাভাবনা থেকে এসব প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। রাজস্ব আয় বাড়িয়ে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।