নতুন করে রিজার্ভ চুরির খবর মিথ্যা : বাংলাদেশ ব্যাংক

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আবারও অর্থ চুরি হয়েছে বলে ভারতের একটি নিউজ পোর্টাল সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, ভারতের হ্যাকাররা গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে ভারতীয় পোর্টালের সেই খবর নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা বলছে, নতুন করে কোনো রিজার্ভ চুরি হয়নি। ওই খবরটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়া (ফেইক)।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় গণমাধ্যম ‘নর্থইস্ট নিউজে’ রিজার্ভ চুরির বিষয়ে খবরটি প্রকাশিত হয়। এরপর মতিঝিলের ব্যাংকপাড়া, সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকে এ তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্ক ফেডের সঙ্গে লেনদেনে নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে বর্তমানে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নীতি চালু রেখেছে। ফলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি সঠিক নয়, এখন রিজার্ভ চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ভারতের ‘নর্থইস্ট নিউজ’ নামের ওই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত খবরটির শিরোনাম ছিল– ‘চলতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোটি কোটি ডলার চুরির পেছনে ভারতীয় হ্যাকাররা জড়িত?’

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌‘অজ্ঞাত পরিচয়ের সন্দেহভাজন ভারতীয় হ্যাকাররা ডিজিটাল উপায়ে প্রায় এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করেছে। দুই দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ‘চাঞ্চল্যকর’ এ চুরির বিষয়ে অবগত আছে এবং তারা নীরবে এ ঘটনার তদন্ত করছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘এমন একটি সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছে যখন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে রয়েছে। কিছু কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন, রিজার্ভ চুরির সংখ্যাটি ‘একক’ হতে পারে। এটি আমদানি বিল নিষ্পত্তিতে ‘চরম অসুবিধা’ সৃষ্টি করতে পারে।’

এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল কর্মাশিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে। অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়। ফিলরেম মানি রেমিট্যান্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।

এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তার কোনো হদিস মেলেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *