হাবিবুর রহমান হাবিব, ধুনট (বগুড়া) : বগুড়ায় স্বর্ণ চুরি মামলার মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ।বগুড়া শহরের নিউ মার্কেটে আল-তৌফিক জুয়েলার্সে ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি মামলার মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। গত ৬ মে চট্রগ্রামের পটিয়া ও ফিরোজশাহ কলোনী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৭ ভরি ৮ আনা ৪ রতি স্বর্ণ ও ১টি বোল্ট কাঁটার উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলো-কুমিল্লা জেলার কদমতলা এলাকার জুলহাজ ওরফে ঝরু এর ছেলে মোঃ রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেল (২৭), নারায়নগঞ্জ জেলার দেওভোগ গ্রামের শ্রী নন্দ সাহার ছেলে ইব্রাহিম ওরফে নয়ন (৩০) ও কুমিল্লা জেলার দক্ষিণ সদর কমলাপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ শাহজালাল (৪৬)।এর আগে গত ২০ এপ্রিল রাতে শহরের নিউ মার্কেটে আল তৌফিক জুয়েলার্সে এ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দোকানের মালিক কামরুল হোসেন বাদী হয়ে ২১এপ্রিল বগুড়া সদর থানায় চুরি মামলা দায়ের করেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা ( আনুমানিক ১.২০ pmটায়) বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী প্রেস ব্রিফিং এসব তথ্য জানান।জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল সকালে বগুড়া নিউ মার্কেটের আল-তৌফিক জুয়েলার্সে অভিনব কায়দায় দোকানের শার্টারের তালাকেটে ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। ঘটনার পরের দিন দোকানের মালিক সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে জেলা পুলিশের একটি টিম ছয় দিনব্যাপি গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেলকে একই দিনে ফিরোজশাহ কলোনী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত রুবেলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চুরি করা স্বর্ণ কুমিল্লা সদরের সোয়াগাজী বাজারে বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের শাহাজালাল এর কাছে বিক্রি করে। পরবর্তীতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে শাহাজালালকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে ১৭ ভরি ৮ আনা ৪ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নের দেয়া তথ্যে তালা কাটার যন্ত্র বোল্ট কাঁটার সদরের ছিলিমপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, মূলহোতা রুবেলের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নসহ ১২ জন চুরির ঘটনায় অংশ নেয়। এর মধ্যে নয়নের দায়িত্ব ছিল স্বর্ণের দোকানের তালা কাটার। বাকিরা ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে। ঘটনার দিন চুরি করা স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মূলহোতা রুবেলের নির্দেশনায় নাটোর জেলার মাদ্রাসা মোড়ে একত্রিত হয়ে তারা কুমিল্লা চলে যায়। তারপর নিজেদের মধ্যে চুরির মালামাল ভাগ করে নেয়। গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রত্যেকে বিভিন্ন এ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো।তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা সকলেই ভাসমান। তারা আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। সাধারনত মোবাইল, বিকাশ এবং স্বর্নের দোকন চুরি তাদের মূল লক্ষ্য। গ্রেফতারকৃতরা যে যেকোন জেলায় চুরি করার পূর্বে আগেই চুরির স্থান পরিদর্শন করে থাকে। বিশেষ করে সরকারী ছুটির দিনে চুরি করে। আসামী কবেল ওরফে আঙ্গুল কাঁটা রুবেল এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ১২ টি, ইব্রাহিম ওরফে নয়নের বিরুদ্ধে ৬ টি ও মোঃ শাহাজালালের বিরুদ্ধে ২টি চুরি মামলা রয়েছে। অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, মোঃ শরাফত ইসলাম, সুমন রঞ্জন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ প্রমুখ।