পেটের দায় ‘দিবস’ বুঝে না

Slider লাইফস্টাইল


শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ পহেলা মে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে সরকারি ছুটি থাকলেও এই দিনে কাজে বের হয়েছেন অনেকে। যাদের জন্য দিবস তারাই বলছেন—পেটের দায় ‘দিবস’ বুঝে না।

মহান মে দিবসের সকালের সূর্যের প্রখর উত্তাপে তেতে উঠেছে পুরো শহর। দেশের প্রধান নগরীতে আজ কোলাহল নেই, সড়কে ছুটে চলা মানুষের ভিড়ও নেই। তবে যাদের ঘিরে মহান মে দিবস, তাদের অনেকেই আজ কাজে বের হয়েছেন।

বৈশাখের তীব্র খরতাপে যখন নগরবাসীর হাঁসফাঁস, তখন নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে নগরীর মানব হাটে নিজেদের তুলেছেন দিনমজুররা। মে দিবসের প্রথম সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় কিছু মানুষ ডালি, কোদাল, শাবলসহ দাঁড়িয়ে আছেন।

তারা মূলত নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন। দিনে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকার বিনিময়ে দিন খাটেন এসব শ্রমিক।

রাজধানীর আভিজাত এলাকা গুলশানে এক সড়কের পাশে বাসা পরিবর্তন করার শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন লাল মিয়া। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, শুনেছি আজ মে দিবস। দিবস হিসেব করে কাজে বের না হলে পরিবার নিয়ে খাবো কি? পেটের দায় ‘দিবস’ বুঝে না।

বাড্ডার প্রধান সড়কের পাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে নিজের শ্রম বেচতে হাজির হয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। তিনি মূলত রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আলাপকালে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, জানি আজ মে দিবস, শ্রমিকদের দিবস। এই দিন অনেকেই কাজ করে না, ছুটিতে থাকে। কিন্তু আমাদের তো পেটের দায় আছে। কাঁধে সংসারের দায়িত্ব আছে।

তিনি বলেন, ছুটির দিন বলে আজ কাজে নিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম।

কাজে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা আরেক দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, আমার খুবই অভাবের দিন চলছে। আজ এখনও কাজ পাইনি, তবুও অপেক্ষায় আছি। এমনিতেই আমাদের দিন চুক্তি মজুরি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। তবে আজ যেহেতু বেলা হয়ে গেছে, তাই কিছুটা কম টাকাতে হলেও কাজে যাবো। আসলে দিবস আমাদের জন্য না, আমরা যারা অভাবী তাদের কাজ না করলে দিন চলে না।

এদিকে রাজধানীতে বেশিরভাগ সড়কে খুব কম গণপরিবহন চলাচল করলেও, কিছু কিছু বাস অল্প সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলছে। এমনই একটি বাস তুরাগ পরিবহনের চালক ফরিদ মিয়ার সঙ্গে কথা হয় রামপুরা এলাকায়। তিনি বলেন, ছুটির দিন তাই আজ একেবারেই যাত্রী নেই। অনেকেই আজ বাস বের করেনি। কিন্তু আমরা যারা এই কাজের উপরই নির্ভরশীল তাদের গাড়ি বের না করে কোনও উপায় নেই। আমাদের দিনের বেতন দিনেই হয়, আজ যা ইনকাম হবে তা দিয়েই বাজার করবো, পরিবার নিয়ে খাবো। কিন্তু যদি মে দিবসের কারণে ডিউটি না করি তাহলে খাবো কি? যে কারণে বাধ্য হয়েই আজ কাজে বের হওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *