চৈত্র দিনের শেষ রাত পেরিয়ে সকালের স্নিগ্ধ আলো ফুটেছে কেবল। ততক্ষণে লোকে লোকারণ্য রাজধানীর ফুসফুস রমনা উদ্যান। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী বটমূলে বরাবরের মতো বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ বরণের আয়োজন সাজিয়েছে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ছয়টার দিকে আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে শুরু হয়েছে বর্ষবরণের এবারের আয়োজন। সেই সুরে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ডুবে রয়েছেন অনুষ্ঠান দেখতে আসা নগরবাসী। আছেন নগরপিতাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা।
এবারের পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। সেই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী সৃষ্টির বিজাতীয় অবমাননার প্রতিবাদ এবং লেখনীর দুর্দম শক্তিতে বাঙালির গণজাগরণে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে চলা আবু বকর সিদ্দিককে স্মরণ।
আয়োজকরা জানান, বিশ্বব্যাপী বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে কমেছে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ। যার ফলে ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের। তবে এই সংকটে যেন মানুষ আশাহত না হয়, একে-অপরের পাশে থেকে, হাতে হাত রেখে চলার বার্তাই ছড়িয়ে দিতে এই নান্দনিক আয়োজন।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী। দীর্ঘ আড়াই মাস অনুশীলন সেরে তারা রমনার বটমূলের মঞ্চে উঠেছেন। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এছাড়া ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজেও এটি সরাসরি দেখানো হচ্ছে।