শেরপুরে হাট-বাজার ইজারায় সরকারি রাজস্ব বেড়েছে অর্ধকোটি টাকা

Slider রাজশাহী


মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বগুড়া জেলার “শেরপুরে” হাট-বাজার ইজারায় সরকারি রাজস্ব বেড়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। যার সিংহভাগ টাকা এরইমধ্যে আদায়ও হয়ে গেছে। বাড়তি এই রাজস্ব আদায়ের কারণে হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আর এই রাজস্ব বৃদ্ধির পেছনে সদ্য যোগদানকারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদীর কঠোর অবস্থান ও সুশাসনের সুফল হিসেবে দেখছেন স্থানীয় সচেতন মহল।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই উপজেলার ১৩টি হাট-বাজার আগামি এক বছরের জন্য ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ইজারা দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ সম্প্রতি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য তিনদফায় সময় নির্ধারণ থাকলেও প্রথমদফায় কাঙ্খিত ইজারামূল্যে দরপত্র জমা পড়ায় তাদের অনুকূলেই হাট-বাজারগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হাটের বিপরীতে একাধিক দরপত্র জমা পড়লেও সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়া হয়। বিগত বছরে এসব হাট থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল এক কোটি তিরানব্বই লাখ তিয়াত্তর হাজার পাঁচশ’ উনসত্তর টাকা। সেখানে এবার ডাক হয়েছে দুই কোটি সাইত্রিশ লাখ তেপ্পান্ন হাজার তিনশ’ ছিয়ানব্বই টাকা। যা বিগত তিনবছরের মধ্যে রেকর্ড। প্রতিটি হাট-বাজার থেকেই রাজস্ব বেড়েছে। এমনকি কোনো কোনো হাট-বাজার থেকে সরকার নির্ধারিত ইজারা মুল্যের চেয়ে ডাক হয়েছে দ্বিগুণ। সবমিলিয়ে বাড়তি রাজস্বের পরিমান তেতাল্লিশ লাখ উনআশি হাজার আটশ’ সাতাশ টাকাঅনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার এসব হাট-বাজারগুলোর মধ্যে এবার সর্ব্বোচ রাজস্ব আদায় হয়েছে উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের রানীরহাট থেকে। এই হাটটির সরকারি ইজারামূল্য ছিল আঠাশ লাখ ছয়চল্লিশ হাজার আটশ’ আটষট্টি টাকা। সেখানে অর্জিত হয়েছে ছাপ্পান্ন লাখ ছেষট্টি হাজার টাকা। সর্ব্বোচ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় পাঁচদেউলি এলাকার ব্যবসায়ী মো. রাকিবুল ইসলাম ওই হাটটি পেয়েছেন। এছাড়া ফুলবাড়ী হাটের ইজারামূল্য ছিল চল্লিশ লাখ উনিশ হাজার ছাব্বিশ টাকা। অর্জিত হয়েছে ছয়চল্লিশ লাখ ছেষট্টি হাজার ছয়শ’ টাকা। মির্জাপুর হাটের ইজারামূল্য ছিল তেতাল্লিশ লাখ সত্তর হাজার ছয়শ’ ষোল টাকা। অর্জিত হয়েছে ছয়চল্লিশ লাখ ছেষট্টি হাজার ছয়শ’ টাকা। কুসুম্বী ইউনিয়নের চৌমুহনী হাটের আঠারো লাখ আঠারো হাজার পাঁচশ’ দুই টাকা। অর্জিত হয়েছে আঠারো লাখ একচল্লিশ হাজার টাকা। একই ইউনিয়নের আলতাদীঘি বোর্ডের হাট বারো লাখ বিরানব্বই হাজার। অর্জিত হয়েছে তের লাখ এগারো হাজার। কয়েরখালি হাট দশ লাখ পাঁচ হাজার চারশ’ তেপ্পান্ন টাকা। অর্জিত হয়েছে চৌদ্দ লাখ ছয় হাজার ছয়শ’ টাকা। কল্যানী হাট পয়ত্রিশ হাজার তিনশ’ সাতানব্বই টাকা। অর্জিত হয়েছে একষট্টি হাজার একশ’ দশ টাকা। দোয়ালসাড়া হাট দুই লাখ একুশ হাজার একশ’ সাতাআশি টাকা। অর্জিত দুই লাখ একত্রিশ হাজার টাকা। জামাইল হাট চৌদ্দ লাখ উনপঞ্চাশ হাজার একশ’ নব্বই টাক। অর্জিত হয়েছে পনের লাখ একষট্টি হাজার টাকা। বিশালপুর হাট এক লাখ উনপঞ্চাশ হাজার ছয়শ’ চৌদ্দ টাকা। অর্জিত এক লাখ পঞ্চাশ হাজার দুইশ’ টাকা। ভবানীপুর হাট পাঁচ লাখ একাত্তর হাজার তিনশ’ চল্লিশ টাকা। অর্জিত পাঁচ লাখ পঁচাআশি হাজার পাঁচশ টাকা। ছোনকা হাট তের লাখ এগারো হাজার দুইশ’ তিন টাকা। অর্জিত তের লাখ একুশ হাজার ও সীমাবাড়ী হাটের সরকারি ইজারামূল্য ছিল দুই লাখ তিরাআশি হাজার তেত্রিশ টাকা। সেখানে অর্জিত হয়েছে দুই লাখ পঁচাআশি হাজার সাতশ’ ছিয়া আশি টাকা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইজারাদার বলেন, শেরপুর উপজেলায় এবার হাট-বাজার ইজারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে দরদাতাদের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। তাই বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার রাজস্ব আদায় বেড়েছে। তবে হাট-বাজারগুলো প্রাপ্ত দরদাতাদের নিকট চিঠি ও টাকা আদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।জানতে চাইলে বিশালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তার ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম রানীরহাটের ইজারামূল্য বিগত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ডাক হয়েছে। তাই সরকার অনেক বেশি রাজস্ব পাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে এই উপজেলার হাট-বাজারগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। হাট-বাজার থেকে অর্জিত রাজস্বের প্রায় অর্ধেকই উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিলে জমা হয়। আর এই তহবিলের অর্থ দিয়েই উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে গৃহিত প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *