মধ্যরাতেও নিউমার্কেটে মানুষের ঢল, জমজমাট বেচাকেনা

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এরই মধ্যে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষজন। আর ঈদের আনন্দের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নতুন জামা-কাপড় কিনতে নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় ঢল নেমেছে মানুষের।

হাজার-হাজার মানুষের ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই এখন মধ্যরাত। মার্কেট, শপিং সেন্টার, বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত সব জায়গায় চলছে জমজমাট বেচাকেনা। মানুষের ভিড়ে পুরো এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক যানজটও।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, এলিফ্যান্ট রোড, নীলক্ষেতসহ আশপাশের এলাকায় এমন চিত্র চোখে পড়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার অধিকাংশ ছোট-বড় মার্কেট এবং শপিং সেন্টার, দোকানগুলোতে করা হয়েছে লাল-নীল আলোকসজ্জা। জ্বলছে রং বেরঙের বাতি। মার্কেটগুলোতে পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, টিশার্ট, গেঞ্জি, শাড়ি কাপড়, থ্রি পিস, বাচ্চাদের পোশাক, টুপিসহ বিভিন্ন চাকচিক্যময় পোশাকের ব্যাপক সমাহার।

মিরপুর রোডের গোল্ডেন গেট শপিং সেন্টার, খান প্লাজা, কাদের অর্কেড, প্রিয়াঙ্গণ শপিং সেন্টার, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নেহার ভবন, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেটসহ নিউমার্কেটের ভেতরে হাজার-হাজার মানুষের উপস্থিতি। মধ্যরাতেও চলছে সমান তালে বেচাকেনা। সব বয়সী মানুষজনই দোকানে-দোকানে ঘুরে পছন্দের জামা কাপড় কেনার চেষ্টা করছেন।

আর ক্রেতার এমন উপস্থিতিতে খুশি বিক্রেতারাও। তারা বলছেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বেচা-বিক্রি অনেক ভালো। অনেক বছর পরে এমন ভরপুর ক্রেতার দেখা তারা পেয়েছেন। আর ঈদের দিন যত এগিয়ে আসবে ক্রেতার পরিমাণ ততই বাড়বে।

বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেটের পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী লিটন বলেন, মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে নিউমার্কেট এলাকায় আসে কম দামে ভালো জিনিস কেনার জন্য। এ বছর রোজার শুরু থেকেই ক্রেতার পরিমাণ অনেক ভালো। আমরাও ঈদকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের পাঞ্জাবি আমার দোকানে রয়েছে। সব ধরনের মানুষজন যাতে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য আমরা কম দাম থেকে শুরু করে অনেক দামের পাঞ্জাবিও রেখেছি। সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি আমার দোকানে রয়েছে। বিক্রি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি, সামনে দিনগুলোতে আরও ভালো বিক্রি হবে।

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের শার্ট-প্যান্ট ব্যবসায়ী আবুল হাসান বলেন, যতটা আশা করেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি ক্রেতার দেখা পাচ্ছি। সারাদিনে যতটা বেচা বিক্রি হয় তারচেয়েও বেশি বিক্রি হয় সন্ধ্যার পর। এখন তো দোকানের নির্দিষ্ট টাইম নেই। সকালে থেকে রাত পর্যন্ত যতক্ষণ ক্রেতা থাকে ততক্ষণ দোকান খোলা রাখা হয়।

অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, সারাদিন রোজা রেখে মার্কেট করতে আসলে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। তাই ইফতার করে সন্ধ্যার পরই বাড়ি থেকে বের হন তারা। আর মধ্যরাত পেরিয়ে গেলেও মার্কেট বন্ধ না হওয়ায় কোন সমস্যায় পড়তে হয় না তাদের।

আশিয়া আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি যাত্রাবাড়ী থেকে এখানে শপিং করতে এসেছি। মার্কেটে আসা হয় এক জায়গায় অনেক ধরনের পণ্য পাওয়া যায় সেজন্য। এছাড়া এখানে দামাদামি করে কম দামে জিনিস কেনা যায়। সেজন্যই এখানে এসেছি।

তারেক হাওলাদার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাব। তাই বাড়ির সবার জন্য কাপড় নিয়েছি। আসলে নিউমার্কেটে অপেক্ষাকৃত কম দামে কাপড় পাওয়া যায়। ধরেন মার্কেটে কাপড় না মিললে ফুটপাতেও পাওয়া যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য এটি বড় সাশ্রয়।

অপরদিকে মার্কেট করতে আসা মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে সরব অবস্থান দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। নিউমার্কেটের সামনে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *