রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে একটি কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো শতাধিক লোক। শুক্রবার মস্কোর ক্রকাস সিটি হলে এই ঘটনা ঘটে।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় গ্রহণ করেছে বলে তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জানায়। তবে বিবিসির নিরাপত্তা সংবাদদাতা গর্ডন কোরেরা জানান, অতীতেও অনেক হামলার দায়িত্ব আইএস দাবি করলেও পরে দেখা গেছে, তাতে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না।
মিডিয়া এবং বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, অন্তত পাঁচ বন্দুকধারী এই হামলায় অংশ নেয়। ছদ্মবেশে কনসার্ট হলে ঢুকেছিলেন। হামলাকারীদের কাছে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ছিল। তারা গুলি করা ছাড়াও গ্রেনেড ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে চলে এই হামলা।
এই হামলার নিন্দা করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ‘সন্ত্রাসী হামলা’। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আশপাশের এলাকা খালি করে দেয়া হয়েছে। হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা।
রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলাকারীরা সংখ্যায় কমপক্ষে পাঁচজন ছিল। তারা ছদ্মবেশে কনসার্ট হলে ঢুকেছিল। হামলাকারীদের কাছে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ছিল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স হামলার যে ভিডিও প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, হামলাকারীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে এবং হলের মধ্যেই বোমা ছুড়ছে। অডিটোরিয়ামের ছাদে আগুন লেগে ধোঁয়ায় ভরে গেছে চার দিক।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওই দেশের এক সাংবাদিক ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত চলা এই হামলা থেকে বাঁচতে অনেকেই মাটিতে শুয়ে পড়েছিল। গুলি চালানো বন্ধ হলে লোকজন সেখান থেকে হামাগুড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। রাশিয়ার আপৎকালীন মন্ত্রণালয় তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, হামলার হাত থেকে বাঁচতে হলের বেসমেন্টে প্রায় ১০০ জন আশ্রয় নিয়েছিল। হলের ছাদেও আশ্রয় নিয়েছিল অনেকে। সকলকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।ওই সময় যে গানের ব্যান্ডটির অনুষ্ঠান চলছিল তার সকল সদস্যকেও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই এই জঘন্য অপরাধের নিন্দা করা উচিত।’ এই হামলার নিন্দা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তবে তারা এও জানিয়েছে, এই হামলার সাথে ইউক্রেনের কোনো প্রকার যোগসাজেশ নেই।