কিশোরগঞ্জে বেগুনের কেজি ১ টাকা ২৫ পয়সা, কেনার লোক নেই

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


কিশোরগঞ্জের হাওরে কৃষকের ক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীরা গড়ে বেগুন কিনে আনছেন ৫০ টাকা মণে। এ হিসেবে কৃষক প্রতি কেজি বেগুনের দাম পাচ্ছেন মাত্র এক টাকা ২৫ পয়সা করে।

বুধবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকের ক্ষেতে, গ্রামের বাজারে ও জেলা শহরের খুচরা বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রামের বাজারে মান ভেদে ভাগ করে বেগুন বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কেজিতে। জেলা শহরে এ বেগুন বিক্রি হচ্ছে আবার ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি করে।

ভোক্তারা জানান, রমজানে প্রতি বছরই আগুন লাগে বেগুনের বাজারে। ব্যতিক্রম ছিল না এবারও। সপ্তাহের শুরুতেও জাত ও মান ভেদে বেগুনের দাম ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। তবে হঠাৎ করেই ধস নেমেছে বেগুনের বাজারে।

গতকাল সকালে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালি বাজারের কাঁচা মলে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুন বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে। বড় জাতের বেগুন আবার ১৫ টাকা কেজি করে দাম চাওয়া হচ্ছে। একই চিত্র এই উপজেলার গ্রামের বেশ কয়েকটা হাটেও।

মরিচখালি বাজারে কথা হয় গুণধর ইউনিয়নের চুল্লি গ্রামের কৃষক ফাইজ উদ্দিনের সাথে। তিনি ১৭ শতক জমিতে এবার বেগুন চাষ করেছেন। শুরুতে কিছু বেগুনে ভালোই দাম পেয়েছেন। গত দুই দিনে দাম একেবারেই পড়ে গেছে।

ফাইজ উদ্দিন জানান, এ বাজারের দুজন পাইকারেরর কাছে বুধবার সকালে ক্ষেতে বসে ৫০ টাকা মণে ১০ মণ বেগুন বিক্রি করেছেন তিনি। বেগুনের টাকা নিতেই তার বাজারে আসা।

মরিচখালি বাজারের উত্তর দিকের গ্রাম অশতকা। সেখানে মাঠে কথা হয় কৃষক নজরুল ইসলাম, দিলওয়ার হুসেন ও আবু হানিফের সাথে।

তারা জানান, ক্ষেতে তাদের মণের মণ বেগুন পড়ে আছে। পাইকার পাচ্ছেন না। কৃষকেরা জানান, বেগুন উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে দাম কমে ক্ষতির কবলে পড়েছেন তারা।

মরিচখালি বাজারের খুচরা সবজি-বিক্রেতা শাফায়াত, শাহ আলম ও হেলাল উদ্দিন জানান, দুদিন ধরে বাজারে বেগুনের সরবরাহ ব্যাপক হারে বেড়েছে। আশপাশের গ্রামের কৃষকেরা বস্তায় ভরে বেগুন নিয়ে আসছেন বাজারে। পাইকাররাও ক্ষেতে গিয়ে বেগুন নিয়ে আসছেন। কিন্তু বিপরীতে ক্রেতাদের মধ্যে বেগুনের চাহিদা কমে গেছে। তাই দাম পড়ে গেছে। এ অবস্থায় বিপাকে ব্যবসায়ী ও কৃষক।

আশতকা থেকে করিমগঞ্জ উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে নিয়ামতপুর ইউনিয়নের রৌহা গ্রামে কথা হয় জেসি এগ্রোর মালিক এরশাদ উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) তার গ্রামের এক কৃষক জমি থেকে বেগুন তুলে বিক্রি করতে পারছিলেন না। ফেলে দেয়ার অবস্থা। পরে তিনি দুই বস্তা বেগুন তার খামারের গরুকে খাওয়ানোর জন্য ১০০ টাকা দিয়ে নিয়ে আসেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের অন্যতম বড় কাঁচাবাজার পুরানথানার খুচরা ব্যবসায়ী ফেরদৌস মিয়া জানান, গত কয়েকদিন ধরে বেগুনের দাম কম। মানুষ বেগুন কিনছেনও কম।

ফেরদৌস মিয়া বলেন, ‘আমরা ছয় থেকে আট টাকা কেজি কিনে এনে এখন বিক্রিই করতে পারছি না। ইফতারে বেগুনি খাওয়ার কারণে বেগুনের দাম থাকে এখন হয়তোবা বেগুনি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন রোজাদারেরা, তাই দাম কমে গেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *