আইনজীবী যুথীর জামিন আবেদন শুনতে হাইকোর্টের অপারগতা প্রকাশ

Slider বাংলার আদালত

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা ও ফলাফল নিয়ে মারামারির ঘটনায় হওয়া মামলায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথীর আগাম জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুথির আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আওসাফুর রহমান বুলু। তিনি বলেন, আগাম জামিন আবেদন গ্রহণ করেননি হাইকোর্ট। একজন জামিন শুনানিতে বিব্রতবোধ করায় আবেদনপত্র ফেরত দেয়া হয়েছে। আমরা চারজনের জামিন আবেদন করেছিলাম।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়।

যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা মামলায় অ্যাডভোকেট যুথি এক নম্বর আসামি। একই মামলার আসামি অ্যাডভোকেট শাকিলা রৌশন, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা) জামিন আবেদন করেছেন।

এরআগে, গত ৮ মার্চ রাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলায় স্বতন্ত্র থেকে সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এ মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই বিএনপির ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন অ্যাডভোকেট মো: জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ (৫৫), অ্যাডভোকেট শাকিলা রৌশন, অ্যাডভোকেট কাজী বশির আহম্মেদ, ব্যারিস্টার উসমান, অ্যাডভোকেট আরিফ, অ্যাডভোকেট সুমন, অ্যাডভোকেট তুষার, রবিউল, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), সাইদুর রহমান জুয়েল (৪০), অলিউর, যুবলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন, আসলাম রাইয়ান, অ্যাডভোকেট তরিকুল ও অ্যাডভোকেট সোহাগ। এছাড়া মামলায় ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা ১নম্বর আসামির নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাকি আসামিরা সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নিচ তলার শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনের দরজা খুলে অস্ত্র হাতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় আমাকেসহ নির্বাচন সাব-কমিটির অন্যান্য সদস্যদের গালিগালাজ করে। ৫ নম্বর আসামির হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার মাঝ বরাবর আঘাত করলে আমি বাধা দিতে গিয়ে আহত হই। অন্যান্য আসামিরা কাঠের লাঠি, কাঠের ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে অতর্কিতভাবে মারপিট করে ও পা দিয়ে আঘাত করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আমার পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। আসামিরা আমার সাথে থাকা ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকে মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে ৫ নম্বর আসামির হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকে আঘাত করে তার ডান হাতের আঙ্গুল ভেঙে ফেলে ও কাপড় ছিঁড়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ১ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট রিনা বেগমকে চড় থাপ্পড় ও হুমকি দেয় এবং ১১নম্বর আসামি গলা চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা অডিটোরিয়ামের ভেতরে ভাঙচুর ও অরাজকতা সৃষ্টি করে। ফলে নির্বাচনী দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে নির্বাচনী অন্যান্য কার্যক্রম সম্পূর্ণ রূপে ভণ্ডুল হয়ে যায়। একপর্যায়ে সকল আসামিসহ ১ নম্বর আসামি অস্ত্রের মুখে নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরকে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য বাধ্য করে। নির্বাচন সাব-কমিটির সকল সদস্য জীবন বাঁচানোর জন্য ভোট গণনার কাজ না করেই চলে যেতে বাধ্য হন। আমার পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা ১২ নম্বর আসামি নিয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার বিষয়ে সমস্ত ধারণ করা আছে। অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ আসামিরা সম্পন্ন হতে না দিয়ে ১নম্বর আসামিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে তার নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *