ছবি ( টঙ্গীর সোনাভান মার্কেট) )
টঙ্গী( গাজীপুর) প্রতিনিধি: ৩ মার্চ কালের কন্ঠ অনলাইনে ও প্রিন্ট ভার্সনে উচ্চ ঝুকিতে টঙ্গীর সোনাভান মার্কেট শিরোনাম সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের পর তদন্ত করে সঠিক পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন গাসিক মেয়র জায়েদা খাতুন। একই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের নামে কেউ চাঁদা তুলে থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রবিবার (১০ মার্চ) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান এই তথ্য জানান।
নুরুজ্জামান বলেন, বার বার নোটিশ দেয়ার পরও ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি খালি হচ্ছে না। এই নিয়ে কালের কন্ঠে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ। তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করে সঠিক পাওয়ায় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। ইতোমধ্যে গাসিক মেয়র জায়েদা খাতুন ঝুঁকিপূর্ণ সোনাভান মার্কেট উচ্ছেদ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। যে কোন সময় উচ্ছেদ অভিযান হবে বলে জানান তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশনের নামে কারা চার বছর ধরে চাঁদা আদায় করছেন, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে সোনাভান মার্কেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি সহ সংশ্লিষ্টদের সিটি কর্পোরেশনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। চাঁদা আদায়ের প্রমান পাওয়ার সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ( ৭ মার্চ) দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: সোহেল রানা টঙ্গীর সোনাভান মার্কেটে এসে সতর্কতা জারী করেন।
ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা বলেন, সোনাভান মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক আগেই এই মার্কেট খালি করতে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু মার্কেট ভবন খালি করা হচ্ছে না। এই মার্কেট ভবন থেকে সিটি করপোরেশন কোন রাজস্ব নেয় না উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, যারা সিটি কর্পোরেশনের নামে রাজস্বের আদলে চাঁদা আদায় করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ এই মার্কেট ভবনটি খালি করার বিষয় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত: দেশের বৃহত্তম পাইকারী পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের মোকাম ‘টঙ্গী বাজার’। এই বাজারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘সোনাভান বিপণী বিতান’। এই মার্কেটটি ২০১৩ সাল থেকে মৌখিকভাবে, ২০১৯ সালে চূড়ান্তভাবে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়। ২০২০ সালে ১২ দিনের মধ্যে ভবনটি খালি করার নির্দেশ দিলেও চার বছরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন আদেশ কার্যকর করতে পারেনি। ফলে কয়েক শত ব্যবসায়ী উচ্চতর ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন।
গোপন সূত্র জানায়, সোনাভান মার্কেটে শতাধিক দোকান রয়েছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় ও ১৫/২০ লাখ টাকা করে সিকিউরিটি মানি দিয়ে প্রতিটি দোকান চলছে। স্থানীয় কাউন্সিলরেরও একাধিক দোকান আছে। তাই ঝুঁকিপূর্ন হলেও কেউ কিছু বলে না। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এখান থেকে সুবিধা নেয়।
সোনাভান মার্কেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি হানিফ মিয়া বলেন, ২০২১ সাল থেকে মার্কেটটি পরিত্যক্ত। তবে সিটি কর্পোরেশন রাজস্ব নেয়। শত শত মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তিনি কোন সদোত্তরা দিতে পারেননি।
এবিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন বলেন, সোনাভান মার্কেটে আমার দোকান নেই। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। বার বার বলার পরও ওরা সময় নেয়। মান্নান ও জাহাঙ্গীর কোন মেয়রই উচ্ছেদ করতে পারছে না।