হাবিবুর রহমান (হাবিব): বগুড়ায় সাবেক পৌর যুবলীগ নেতা চকসূত্রাপুরের সোহাগ সরকারকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ১৫ বছরের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানার আদেশ দিয়েছে ২য় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সর্বোচ্চ ৭ বছর ও সর্বনিম্ন ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ ছাড়াও আসামীদের জরিমানাও করেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে ২য় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এর বিচারক মোহাম্মদ হোসেন এই রায় দেন।
রায় প্রদানকালে এসময় আদালতে এজাহারের ৯নং আসামী রেজাউল ও ১০ নং আসামী জাহিদুর উপস্থিত ছিলেন যাদের মাঝে রেজাউলের ৫ বছর এবং জাহিদুরের ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশসহ প্রত্যেকেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। এছাড়াও জামিনের পর থেকে পলাতক থাকা মামলার অন্যতম প্রধান আসামীগণ যাদের মাঝে ১ নং আসামী শফিকুলের ৭ বছর জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ২ নং আসামী শরিফের ৩ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৪নং আসামী জেল্লালের ৬ বছর জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৫নং আসামী ঝন্টুর ৫ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৬নং আসামী বাটুলের ৩ বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৭নং আসামী ফুল্লা আলমের ৭ বছর জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৮নং আসামী দিপুর ৬ বছরের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, ১১ নং আসামী রোপন সরকারের ৪ বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ১২নং আসামী জহুরুলের ৪ বছর এবং ১৩নং আসামী আশরাফের ৩ বছর জেল এবং উভয়ের ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। নথিসূত্রে জানা যায়, আসামীদের মাঝে এজাহারের ১ থেকে ৮ নং আসামী বগুড়ার চাঞ্চল্যকর ঠান্ডু হত্যা মামলার আসামী। যে মামলাতেও বগুড়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী শফিকুল, জেল্লাল ও ফুল্লা আলমসহ বাকিরা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত যদিও উল্লেখিত আসামীদের মাঝে বিচারকার্য চলাকালীন এজাহারের ৩নং আসামী খান্দারের রঞ্জু মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রায় প্রদানকালে উপস্থিত সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামী রেজাউল ও জাহিদুরকে বগুড়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাবেক পৌর যুবলীগ নেতা সোহাগ বগুড়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সরকারের আপন ছোট ভাই। আলোচিত ঠান্ডু হত্যা মামলা দেখভাল করার জের ধরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর শহরের নামাজগড় মিজানের চায়ের দোকানের সামনে সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাইক্রো ও মোটরসাইকেলযোগে এসে চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে সোহাগ সরকারকে এলোপাতাড়ি রক্তাক্ত ও জখম করে যে হামলায় সোহাগের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়াও পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় যেখানে চিকিৎসকরা সেলাই দিতেও সেসময় হিমশিম খেয়েছে। আলোচিত এই হামলার ঘটনার ১দিন পর ২৭শে অক্টোবর সোহাগ সরকারের ভাই ঝুমুর সরকার বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছিলো সেই মামলাতেই মঙ্গলবার চার্জশিটভুক্ত ১২ জনের বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানার আদেশ দেন আদালত।আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আদালতের এপিপি শফিকুল আলম আক্কাসসহ ভুক্তভোগীর পরিবার তবে জামিনের পর থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মাঝে পলাতকথাকা আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।