মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃবগুড়া জেলাজুড়ে এখন উপজেলা নির্বাচনের আমেজ। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে তৎপর হয়ে উঠেছেন বগুড়ার ১২টি উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে তৎপরতা পুরোটাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সব উপজেলায় সরকারদলীয় প্রার্থীর ছড়াছড়ি।কিন্তু এখনো বিএনপি বা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো প্রার্থীকে নিয়ে আলোচনা নেই জেলার কোথাও। জাতীয় নির্বাচন বর্জনের পর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি না সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, বগুড়ার ১২টি উপজেলায় নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বগুড়ার উপজেলাগুলোতে চলছে নির্বাচনি উত্তাপসমর্থন চেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পোস্টার-ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন। তিনটি পদে ১২টি উপজেলায় অনেক প্রার্থী তাদের তৎপরতা শুরু করেছেন। দলীয় প্রতীক না থাকায় আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর অসংখ্য নাম প্রকাশ পাচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকার হাটবাজার, চা স্টল চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের যোগ্য ব্যক্তি মনে করে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা।বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আছাদুর রহমান দুলু, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রভাষক সোহরাব হোসেন ছান্নু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি খরনা ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি সাজেদুর রহমান শাহীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক আরজু, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ভিপি এম সুলতান আহম্মেদ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বুলবুল আহম্মেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভপতি প্রদীপ কুমার মোদক, মাদলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজনুর রহমান শাহীনের নাম শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেফাজত আরা মিরা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লাভলী ইয়াসমিন স্বপ্না, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পলি আক্তার এবং উপজেলার খরনা ইউনিয়নের চকভালী গ্রামের গাজী দেলোয়ার ওরফে সম্রাটের স্ত্রী গৃহবধূ পাপিয়া সুলতানার নাম শোনা যাচ্ছে। বগুড়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম রাজ প্রার্থী হতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।তারা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন এবং ভোট প্রার্থনা করছেন। সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়তে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম মন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক দুলু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী তরফদার, সাধারণ সম্পাদক আশিক আহম্মেদ, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সালাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মিঠু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। গাবতলী উপজেলায় উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান ও বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম ভুলন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সদস্য কৃষিবিদ অরুণ কান্তি রায় সিটন, সাবেক সেনাসদস্য আতাউর রহমান বানু, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সিদ্দিকী। সোনাতলা উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মিনহাদুজ্জামান লিটন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাকির হোসেন জাকির, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাউল হক জুলু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুল ইসলাম খন্দকার।শিবগঞ্জ উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা। কাহালু উপজেলায় উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আল হাসিবুল হাসান সুরুজ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ এ এন এম আহসানুল হক, আলহাজ আবুল কাশেম মনজু, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান কাজলের নাম শোনা যাচ্ছে। দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলুল হক, সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবিএম নুরুল ইসলাম খান হিরু, জামায়াত নেতা নূর মো. আবু তাহের। আদমদীঘি উপজেলায় উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম মন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অজয় কুমার সরকার, সদস্য ও সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদা সুলতানা তৃপ্তি, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান মন্টি এবং উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রাজা।শেরপুর উপজেলাতে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, যুবলীগের সভাপতি তারেকুল ইসলাম তারেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহ জামাল সিরাজী, ব্যবসায়ী দবিবর রহমান দবির মুন্সিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ভোটারদের কাছে বেশ পরিচিত মুখ। ধুনট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যাদের না শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল হাই খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান টিআইএম নূরুন্নবী তারিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল সনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান। নন্দীগ্রাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মজিবুল্লাহ মজনু, সাবেক বিএনপি নেতা শামসুর রহমান, সাবেক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আলী। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মজিবর রহমান মজনু জানান, দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন জমে উঠছে বলেই মনে হচ্ছে। আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে কাউকে প্রতীক দেওয়া হবে না। সে কারণে এ নির্বাচনে প্রার্থীও বেশি হবে। প্রার্থী বেশি হলেও সংঘাত হবে না। কারণ নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। যেমন করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে