রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জের আওতাধীন সরকারি বন বিভাগের সম্প্রসারণে সংরক্ষিত বনভূমি দখল ও গাছ কাটা হচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের অধীন শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখাইর বিট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিনে জানা যায়, সাতখাইর বাজার থেকে পূর্ব দিকে রেইন ফরেস্ট ইকো নামে বনের গহীনে বিলাসবহুল রিসোর্ট।
রেইন ফরেস্ট ইকো নামের এই স্পটের চারপাশে সংরক্ষিত গজারি বন। সেখানে এরই মধ্যে বনভূমি দখল করে একটি সংযোগ রাস্তা করা হয়েছে। কাটা হয়েছে ছোট-বড় কিছু গাছ।
বরমী টু মাওনা পাকা রাস্তার পাশে দেখা গেল গজারি বনের বিতর দিয়ে বয়ে গেছে একটি কাচা রাস্তা ।
মূল গেটের রাস্তার দখলীয় অংশে ধীরে ধীরে বন উজাড় করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে রিসোর্টের সীমানা প্রাচীর।
হাঁটাচলার প্রায় এক কিলোমিটার সাধারণ পথটি পরিণত হচ্ছে ব্যবসায়িক রাস্তায়। বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ভেঙে যাচ্ছে গাছপালা।
সম্প্রসারিত স্পটে বন ঘেঁষে হাঁটার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াক ওয়ে। ইতিপূর্বে সেখান দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী নেওয়ায় প্রায় এক শতাংশ বন উজাড় হয়েছে।
স্পট টির কোথাও ডিমারকেশনের খুঁটি পাওয়া যায়নি। বন কর্মকর্তারা যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন ও পরিবেশ-প্রতিবেশ।
বন বিভাগের একজন বলেন, বনের ভেতরে থাকা জোত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করলে অবশ্যই যৌথ ডিমারকেশন লাগবে। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডের বা নিজস্ব রাস্তা ব্যতীত বনের ওপর দিয়ে রাস্তা করার সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাতখামাইর সাবেক বিট অফিসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুতে প্রতিরোধ না করায় ক্ষতি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
বর্তমান বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে রিসোর্টির নির্মাণ কাজ শুরু হয়, ২০২২ সালে রেইন ফরেস্ট ইকো রিসোর্ট ডিমারকেশনের জন্য আবেদন করেছে। ডিমারকেশন ছাড়া কোনভাবেই সংরক্ষিত বনের ভেতর স্থাপনা করতে দেওয়া যাবে না সংগ্রহীত বনের ভিতর রিসোর্টে কাজের খবর পেয়ে সাথে সাথেই তাদের কাজকর্ম বন্ধ করে দিই আমরা। তাদেরকে বনের ওপর দিয়ে রাস্তা না করতে বলা হয়েছে। জোর করলে মামলা দেওয়া হবে।
কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে বাস্তব অবস্থা পাল্টে গেছে। রাস্তাগুলো চলাচলের উপযোগী করে অন্যান্য কার্যক্রমও অবাধে চলছে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার মোকলেছুর রহমান বলেন, রিসোর্টি জোত ভূমিতে অবস্থিত, বিগত কয়েক বছর ধরে বনের মধ্যে পায়ে হাটার রাস্তা ছিলো, ইতিমধ্যে রিসোর্টের লোকজন মাঝে মাঝে এটা ব্যবহার করে, আমরা সংবাদ পেয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছি। রিসোর্টি গত দুই তিন বছরের পুরাতন এবং বনের জমিতে নয়। তারা ডিমারকেশনের আবেদন করেছে।