টঙ্গী: বিশ্ব ইজতেমার মূলপ্যান্ডেল অনেকটা খালি রেখে নির্মান কাজ সমাপ্ত হয়েছে। খালি জায়গায় ৬৪ জেলা থেকে সামিয়ানা আসবে ও পরে টানানো হবে। ইজতেমা শুরু থেকে এই প্রথমবারের মত সারাদেশের সকল জেলা থেকে প্যান্ডেলের সামিয়ানা আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে সকল ইজতেমায় পুরো প্যান্ডেল নির্মান করা হতো একসাথে।
শুক্রবার(২৬ জানুয়ারী) ইজতেমা ময়দান ঘুরে এই সকল তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ব ইজতেমার অধিকাংশ জায়গা খালি। শুধু বাঁশ পুঁতে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় ইজতেমার নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সূরা সদস্য শাহ আলম বলেন, এবারই প্রথম সিদ্ধান্ত হলো, খিত্তাওয়ারী সকল জেলা থেকে সামিয়ানা এনে নিজ দায়িত্বে টানাবে সংশ্লিষ্ট জেলার মুসল্লীরা। এর আগে এরকম হয়নি। জেলাগুলো থেকে সামিয়ানা আসার পর তারা টানাবে তাই এখন ইজতেমার ৯০ ভাগ কাজ শেষ।
আরেক সূরা সদস্য আবুল হাসনাত কালের কন্ঠকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত। আমাদের আর কোন ঘাটতি নেই।
গোডাউন জামাতের জিম্মাদার মাওলানা শিহাব উদ্দিন বলেন, বিশ্ব ইজতেমা আয়োজকদের পক্ষ থেকে মোট ১০টি বিভাগ করা হয়েছে। ১০টি বিভাগ নিয়ন্ত্রন করবে নজমওয়ালী জামাত। ১০টি জামাত হল, পাহারা জামাত, এস্কেবাল(অভ্যর্থনা) জামাত, জুর্নেওয়ালী জামাত, পানির জামাত, বিদ্যুত জামাত, মাইক জামাত, সাফাই জামাত, রিজার্ভ জামাত, গোডাউন জামাত ও নজমওয়ালী জামাত। নজম আলী জামাতে বর্তমানে ৩৫ জন সদস্য রয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ৬সদস্য।
আয়োজকদের এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি জামাতে শতাধিক লোক থাকবে। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তারা কাজ করবে। আগামী বৃহসপতিবার বাদ ফজর পুরো প্যান্ডেলে আলাদা আলাদা খিত্তায় বয়ান হবে। বৃহসপতিবার বাদ আসর বিশ^ জামাতের মুরুব্বীরা বসে সিদ্ধান্ত নিবে কে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন, কারা কারা বয়ান করবেন। তাদের ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৫৭ তম বিশ^ ইজতেমা।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠু সুন্দর ও শান্তিপূর্ন করতে ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটিকরপোরেশন, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস সহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী দপ্তর তাদের নিজ নিজ সেল গঠন করেছে। সাংবাদিকদের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে মিডিয়া সেল। সব মিলিয়ে বিশ^ ইজতেমার শেষ সময়ে প্রস্তুতি নিতে পুরোদমে বিরামহীন কাজ চলছে। যতই সময় যাচ্ছে ততই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে দলে দলে লোক আসছে। মাঠে এসেই ধর্মপ্রাণ মানুষ ইজতেমার কাজে লেগে পড়ছেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। আমরা সর্বোাচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি সুন্দর ও শান্তিপূর্ন ভাবে ইজতেমা সমাপ্ত করতে পারব।
প্রসঙ্গত: ২০১১ সালে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে প্রতি বছর দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রথম পর্ব ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারী ও ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারী দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।