অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আগাম জিডি করেছিলেন কাউন্সিলর পারভিন

গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা সারাদেশ

DSC07098

ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
গাজীপুর অফিস: অপহরণের ২৪ঘন্টা পর উদ্ধার হওয়া গাজীপুর সিটিকর্পোরেশনের নারী কাউন্সিলর পুলিশের সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছেন, তিনি বাবা হত্যা মামলার বাদী। অপহরণের পূর্বে তিনি আগাম জিডি করেছেন। হত্যা মামলা ও জিডির আসামীরাই তাকে অপহরণ করেছেন।

রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় গাজীপুর পুলিশ সুপারের(এসপি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে উদ্ধার হওয়া নারী কাউন্সিলর পারভিন আক্তার ওই দাবী করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে পারভিন আক্তার বলেন, শুক্রবার সকালে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে একটি ফোন আসে। ফোনে জনৈকা মহিলা স্বামীর অজান্তে কম টাকায় স্বর্ন বিক্রি করতে তার নিকট চুক্তি বদ্ধ হন। রাতে স্থানীয় একটি বিচার থেকে বের হওয়ার পর ওই মহিলা তার নিকট দেখা করলে তিনি ওই মহিলার সাথে কথা বলতে বলতে হাঁটতে থাকেন। কাশিমপুর এলাকার স্থানীয় ব্যাটারী গেট থেকে জিরানী বাজার যাওয়ার পর একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠানো হয় তাকে। গাড়িতে তোলার পর হাত মুখ বেঁধে অচেতন করা হয়।

পারভিন বলেন, অচেতন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপহৃত ভিকটিম গাড়িতে বসে থাকা তার বাবা হত্যা মামলা ও নিজের দায়ের করা জিডির প্রধান আসামী দুলাল মিয়া, সহযোগী আসামী জুয়েল ও সোহেল কে চিনতে পেরেছেন। এরপর তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন তাকে একটি ঘরে হাত পা বাঁধা অবস্থায় বন্ধি করে রাখা হয়েছে। তার পাশে অপহরনকারী ওই নারী ছাড়া আর কেউ নেই। কিছুক্ষন পর তাকে আরেকটি মাইক্রেবাসে তোলে আবার অজ্ঞান করা হয়। জ্ঞান ফিরে তিনি দেখেন একটি ব্রীজের পাশে পড়ে রয়েছেন। ওখান থেকে একজন সিএনজি চালক তাকে গাড়িতে না তোলে হাতে ধরে ধরে নিকটবর্তি একটি মার্কেটের সামনে নিয়ে যায়। পর পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে গেলে তিনি জানতে পারেন জায়গার নাম নবীগঞ্জ। জেলার নাম হবিগঞ্জ।

অপহরণের কারন সম্পর্কে পারিভন আক্তার বলেন, ২০১১ সালে স্থানীয় দুলাল মিয়া, জুয়েল, সোহেল সহ কয়েক ব্যক্তি তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা চান মিয়াকে নৃশংসভাবে খুন করেন। তিনি পিতা হত্যা মামলার বাদী। বাবাকে খুনের পর পারভিন আক্তারের পরিবারের দুই সদস্যকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে মিথ্যা হত্যা ও নারী নির্যাতন মামলায় আদালতে চালান দেয়। সম্প্রতি বাবার খুনীরা হুমকি দেয়ায় তিনি তাদের বিরুদ্ধে ৬জুলাই জয়দেবপুর থানায় একটি জিডি করেন। জিডির আসামীরাই তাকে অপহরন করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেন পিপিএম বলেন, অপহরণের পর জনতার দাবীর প্রতি সম্মান রেখে ২৪ ঘন্টার পূর্বেই মাত্র ৯ঘন্টায় ভিকটিম উদ্ধার করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এখন মামলাটি তদন্ত করে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনায় অভিযুক্ত আসামীদের আটকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার রাত ১০টায় জিসিসির ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পারভিন আক্তার নিঁখোজ হন। শনিবার দুুপুরে দিনাজপুরের চিলি বন্দরে  ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে মর্মে সংবাদ পেয়ে গাজীপুরের পুলিশ গিয়ে ফিরে আসে। অবশেষে শনিবার রাত ৯টায় হবিগঞ্জে উদ্ধার হন তিনি। রাতে গাজীপুর পুলিশ হবিগঞ্জ থেকে এনে দুপুরে গাজীপুর পুলিশ অফিসে সম্মেলন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *