ইরানে ইসলামিক রিভ্যুলশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) জেনারেল কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের সময় জোড়া বিস্ফোরণে শতাধিক নিহত হয়েছে। আরো আহত হয়েছে প্রায় ১৫০ জন। ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তার কবরের পাশেই বিস্ফোরণ দুটি ঘটে। চার বছর আগে ২০২০ সালে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় তিনি নিহত হয়েছিলেন।
কেরমানের জরুরি পরিষেবা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ সাবেরি রাষ্ট্রীয় মিডিয়াকে জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৩ জন। গুরুতর আহত অনেকে মারা গেছে।
কেরমান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, জেনারেল সোলাইমানির কবরের কাছেই বিস্ফোরণ দুটি হয়। তিনি একে সন্ত্রাসী কাজ হিসেবে অভিহিত করেন।
সেখানে উপস্থিত লোকজন স্থানীয় মিডিয়াকে জানায়, দুটি আলাদা স্থানে আত্মঘাতী হামলা হয়েছে বলে তাদের মনে হয়েছে। তবে আরেকটি সূত্র জানায়, দুটি স্যুটকেসের ভেতরে বিস্ফোরণ রাখা হয়েছিল। রিমোর্ট কন্ট্রোলের সাহায্যে তাতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে সোলাইমানির কবর থেকে ৭০০ মিটার দূরে। আর দ্বিতীয়টি ঘটে এক কিলোমিটার (০.৬ মাইল) দূরে। এ সময় বিপুল সংখ্যক লোক তার কবরের কাছাকাছি ছিল।
কোনো বিস্ফোরণই সেখানকার সবচেয়ে জনাকীর্ণ স্থানে হয়নি। তেমনটা হলে হামলাটি আরো ভয়াবহ হতে পারত। তাছাড়া হামলাকারীদেরকে কোনো নিরাপত্তামূলক ফটকও অতিক্রম করতে হয়নি।
বিস্ফোরণের প্রাথমিক ছবিতে মনে হয়েছে, হামলায় কবরের কোনো ক্ষতি হয়নি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেইনির পর জেনারেল সোলাইমানিকে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি বিবেচনা করা হতো। তিনি রেভ্যুলশনারি গার্ডের বিদেশী অভিযান শাখা আল কুদ বাহিনীর প্রধান হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানি নীতির স্থপতি ছিলেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে গোপন অভিযানের নির্দেশনা দিতেন, তহবিলের ব্যবস্থা করতেন, অস্ত্র সরবরাহ করতেন।
ওই সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে তাকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোলাইমানিকে ট্রাম্প বিশ্বের এক নম্বর ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল, সিএনএন এবং অন্যান্য