রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ

Slider বাংলার মুখোমুখি


রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিটিজেনস প্লাটফর্ম ফর এসডিজিস, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সংসদ সদস্যদের সম্পদের বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপও করেন এই ফেলো।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক প্রার্থীদের হলফনামায় স্পষ্ট অসঙ্গতি তুলে ধরেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

হলফনামাগুলোতে রাষ্ট্রীয় অর্থ দখলের একটি চিত্র ফুটে উঠে বলে মন্তব্য করেন তিনি। যেখানে নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ন্যায্য মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে উঠে এসেছে। এই অনুশীলন জনগণের কল্যাণে রাজনীতিবিদদের জনসাধারণের প্রতিশ্রুতির সাথে সম্পূর্ণভাবে বিপরীত।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৮৮ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনসহ অসংখ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি, যেখানে ফলাফল ব্যাপক জনমতের বিরুদ্ধে গেছে। এ ধরনের নির্বাচন টেকসই উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং জবাবদিহির জায়গাটিকে সংকুচিত করে।’

তিনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দুর্নীতি দমন এবং রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

নির্বাচনে প্রতিযোগিতার অভাব এবং সংসদে একক দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সমালোচনা করেন ড. দেবপ্রিয়। এর ফলে আইনি সম্মতি এবং নাগরিক অধিকারের অবহেলা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়েও মন্তব্য করেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জবাবদিহি এবং তাদের অর্থায়নের উৎসের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তবে ইশতেহারে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে এসব প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও সিটিজেন প্লাটফর্মের কোর সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান রাজনীতিবিদদের বারবার নির্বাচনের উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট নয় যে তাদের রাজনীতি জনকল্যাণ না ব্যক্তিগত সম্পদ আহরণের জন্য করে থাকেন। কল্যাণের জন্য তাদের অঙ্গীকারের স্বচ্ছতা এবং তাদের সম্পদ অর্জনের উদ্দেশ্য গোপন করা প্রশ্নবিদ্ধ।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে,তারা প্রার্থীদের আয়ের উৎস যাচাই করতে পারছে না, যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, ‘জনগণের দ্বারা তারা নির্বাচিত হওয়ার অধিকারের প্রতি সংসদ সদস্যদের উদাসীনতার কারণে বিষয়টি উদ্ভূত হয়েছে। যার ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বা প্রতিযোগিতার অভাব দেখা দিয়েছে।’

সিপিডির আরেক ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন সামাজিক অর্জনের ওপর গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনগুলোতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর বাড়ানোর উপায়গুলোর মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।

প্রতিবেদনটি প্রস্তুতে মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় সহায়তাকারী এক ডজনেরও বেশি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। ইউকেএইড, অ্যাকশনএইড, কনসার্ন এবং ওয়াটারএইডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো এই গবেষণায় সহায়তা করেছে।

সূত্র : ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *