টঙ্গী( গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুর-২ ( সদর- টঙ্গী) আসনে নৌকা বিরোধীদের জরিমানা ও প্রচারণায় অতিরিক্ত খবরদারির অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রিটার্নিং অফিসার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর-২ ( সদর টঙ্গী) আসনে মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে তিনজন প্রার্থী মাঠ সরব। তারা নিয়মিত প্রচার প্রচারণা করছেন। সরব তিন প্রার্থী হলেন৷ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রচারণা শুরু থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ট্রাক ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে দুই জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় অতিরিক্ত খবরদারির অভিযোগ করেছে প্রার্থী ও প্রার্থীর পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যে ট্রাক প্রতীককে প্রথম দফায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষকদের একটি মিলন মেলায় ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর নাম ও ছবি ব্যানারে থাকায় আয়োজক সংগঠনকে ৫০ হাজার ও ভ্যানুকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বিকেলে টঙ্গীর ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের জিনু মার্কেট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ট্টাকের প্রচারণায় অতিরিক্ত গাড়ি থাকায় সতর্ক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকালই সন্ধ্যায় টঙ্গীর ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে ট্রাক প্রতীকের পথ সভার টানানো ব্যানারের অর্ধেক খুলে ফেলে একই ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল একই সময় ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলামকে প্রচারণায় বেশী গাড়ি থাকার অভিযোগে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে টঙ্গী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না রহমার য্যোতি বলেন, নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসের সামনে ট্রাক প্রতীকের পথসভা করার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে সহ অবস্থান নিশ্চিত করার অনুরোধ করি। এসময় তিনি উপস্থিত দুই পক্ষকে বলেন, জরিমানা করলাম না। মিলেমিশে থাকেন।
এ বিষয়ে ট্রাক প্রতীকের প্রধান সমন্বয়কারী গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় আমাদের উপর চাপ বেশী। অথচ নৌকা প্রতীক প্রতিদিন আচরণ বিধি লংঘন করছেন কিন্তু প্রাশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না।
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার উপর একাধিকবার আক্রমণ করা হয়েছে, আমার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার পোস্টারে আগুন দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে আমি থানা, রিটার্নিং অফিসার ও অনুসন্ধান কমিটির কাছে একাধিকবার অভিযোগ করে কোন ফল পাইনি। বরং আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য দুটি গাড়ি নিয়েছিলাম আমাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অথচ অন্য প্রার্থীরা গাড়ি বহর নিয়ে নিয়মিত আচরণ বিধি লংঘন করছে। তাদের ক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রিটার্নিং অফিসার আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, কোন পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। যেখানেই ঘটনা ঘটছে সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নির্বাচনের শুরুতেই নৌকার প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। তার অনুষ্ঠান ভেঙে দেয়া হয়েছে, জরিমানাও হয়েছে। কোন প্রার্থীর পক্ষে নয়, সবার জন্য সমান দৃষ্টি রয়েছে। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অসত্য ও মিথ্যা। একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও উৎসব মূখর নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সকলের প্রতি সমান দৃষ্টি দিয়ে আচরণ বিধি প্রতিপালনের জন্য কঠোর অবস্থানে আছি আমরা।