টঙ্গী( গাজীপুর) প্রতিনিধি: ছাত্রলীগের বাঁধার মুখে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে টঙ্গী সরকারি কলেজ মাঠে নির্বাচনী সভা করেছে গাজীপুর-২ আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার(২১ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় টঙ্গী সরকারী কলেজ মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন জানা যায়, টঙ্গী সরকারী কলেজ মাঠে বিকেল তিনটায় ট্রাক প্রতীকের পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনী সভা ছিল। সভায় যোগদানের জন্য শত শত নেতা কর্মী কলেজ গেটের সামনে আসলে টঙ্গী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক সেলিম খানের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ কর্মী কলেজের মূল ফটকে ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময় মাঠের ভেতরে ছাত্রলীগের নৌকার মিছিল ও ফটকের বাইরে ট্রাক প্রতীকের মিছিল হয়। একই জায়গায় দুই প্রতীকের পাশাপাশি মিছিল হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় মূল ফটকের সামনে রাস্তায় ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা একটি ট্রাকে উঠে পথসভা শুরু করে। সভা চলাকালীন সময়ে ট্রাকের সমর্থক বাড়তে থাকে। বিকাল চারটায় সময় মূল ফটকের সামনে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন ও তার প্রধান সমন্বয়ককারী গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হলে ট্রাক প্রতীকের সমর্থকেরা প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অতঃপর টঙ্গী সরকারি কলেজ মাঠে ট্রাক এনে মঞ্চ করে সভা শুরু করে।
সভায় গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা রজব আলী, এম এম হেলাল উদ্দিন, নাসির উদ্দিন সহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যে কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন বলেন, সাত তারিখের নির্বাচনে ট্রাক প্রতীকের ভোট দিয়ে আপনারা টঙ্গীবাসীকে জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার করবেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন এমপি কোথায় থাকে কেউ জানেনা। মানুষ সুখ দুঃখের কথা বলতে এমপিকে পায় না। আমাকে ভোট দিলে আপনারা আমাকে পাবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদেরকে তালা মেরে দিয়েছেন। আপনারা তালা খুলবেন।
হুসিয়ারী উচ্চারণ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আঘাত করলে ২৪ মিনিটের মধ্যে প্রতিশোধ নেয়া হবে। প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমাকে খুঁচা দিবেন না। খুঁচা দিলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কি ভাবে পাশ করেছেন সব ডকুমেন্ট আছে, প্রকাশ করে দিব। এসব ডকুমেন্ট দেশী বিদেশি মিডিয়ায় প্রচার হবে। গাজীপুরে ২৪ লাখ শ্রমিক ও ১৭০০ মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, ভোট পাহারা দিবেন তারা। যদি কাউকে হয়রানী করা হয় তবে গাজীপুর অচল করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন তিনি।
তিনি বলেন, সাপ্তাহে তিন দিন মন্ত্রীর পতাকা নিয়ে ওসিকে সাথে করে গরুর খামার দেখতে যান অথচ আপনার গ্রামের বাড়ি হয়দরাবাদের মানুষ দেখতে যান না।
এই ভাবে উত্তেজনার মধ্যে সভা শেষ হয়। বিকেল সাড় চারটা পর্যন্ত এই সভা চলে।
এ বিষয়ে টঙ্গী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক সেলিম খান বলেন, আমরা তালা দেইনি। কলেজ মাঠে ধুমপান নিষেধ। কিছু লোক কলেজ ক্যাম্পাসে ধুমপান ও মাদক সেবন করতে ছিল। আমরা নিষেধ করেছি মাদক সেবন না করতে। সভায় আমরা কোন বাঁধা দেইনি।
টঙ্গী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠের কোন অনুমতি ছিল না। শুনেছি গেট ভেঙেছে।