দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবার ওয়ানডে জেতার ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ নারী দল। ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে প্রোটিয়া নারীদের উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচটি তারা জিতেছে ১১৯ রানের বিশাল ব্যবধানে।
দারুণ এই জয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে শুভসূচনা করল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এটিই বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম ওয়ানডে জয়। এ ছাড়া দুই দলের ওডিআই মুখোমুখিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ জয় পেয়েছিল ২০১৭ সালে কক্সবাজারে।
বাফেলো পার্ক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাঁহাতি ব্যাটার মুর্শিদার অপরাজিত ৯১ রানে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩ উইকেটে ২৫০ রান তোলে টাইগ্রেসরা। ব্যাট করতে নামা দলের পাঁচ ব্যাটারের রানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছে এদিন।
ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ পারফর্ম করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা আর ফারজানা হক মিলে যোগ করেন ৬৬ রান। মার্ক্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার আগে শামিমা ৪৮ বলে করেছেন ৩৪ রান। শামিমার আউটের পর রান তোলার গতি খানিকটা কমে আসে বাংলাদেশের। শুরুর দিকে মুরশিদা যেমন খেলেছেন খানিকটা ধীরগতিতে, তেমনি ফারজানাও খেলেছেন বেশকিছু ডট বল।
ফারজানা ৩৫ করে আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। এসেই রানের গতি বাড়ানোর দিকে নজর দেন টাইগ্রেস অধিনায়ক। তাতে সফলও হয়েছেন তিনি। মুরশিদার সাথে ৮০ রানের জুটিতে জ্যোতি খেলেছেন ৪৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস।
শেষদিকে স্বর্ণা এসে রানের গতি বাড়িয়েছেন আরো অনেকটা। ২৮ বলে ২৭ রান করে স্কোর ২৫০ পর্যন্ত টেনে নিয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ ইনিংসের হাইলাইট হয়ে থাকবে মুরশিদার ইনিংস। দলের রান বাড়ানোর জন্য বারবার স্ট্রাইক ছেড়ে দিয়েছেন স্বর্ণার কাছে। ব্যক্তিগত ইনিংসের চেয়ে দলের রান সংখ্যাই বাড়াতে মনোযোগী ছিলেন ওয়ানডাউনে নামা এই ক্রিকেটার। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ গিয়েছে ২৫০ রান পর্যন্ত। মুরশিদা অপরাজিত থেকেছেন ৯১ রানে।
বাফেলো পার্কে ওয়ানডেতে গড় পুঁজি আড়াইশোরও নিচে। এমন পরিসংখ্যান কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছিল বাংলাদেশের ২৫০ রানের পুঁজিকে। টাইগ্রেসদের স্বস্তি আরও বাড়ান সুলতানা খাতুন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসেই ফেরান প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা উলভার্টকে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ৫ রান।
লরার বিদায়ের পর আর কোনো রান যোগ করার আগেই আরও একটি উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওপেনার তাজমিন ব্রিটসকে ফেরান মারুফা আক্তার। এরপর অ্যানিকে বখ ও সুনে লুস মিলে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। তাদের জুটিতে আসে ৪১ রান। কিন্তু তারপরেই আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে তাকে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ১৩১ রানে গিয়ে সবকটি উইকেটের বিদায় ঘটে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন এলিজ-মারি মার্কস। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন নাহিদা আক্তার। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ফাহিমা, রাবেয়া ও সুলতানা খাতুন।