জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে গণমানুষের ঢল

Slider জাতীয়


মহান বিজয় দিবস আজ। আজকের এই দিনে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আজকের এই লাল সবুজের পতাকা। তাই তো তাদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছে গোটা জাতি। শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেমেছে গণমানুষের ঢল।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এরপরই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক। সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করতে থাকে রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী, ও সরকারি-বেসরকারি সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ। স্মৃতিসৌধে নামে গণমানুষের ঢল।

পরাধীনতার শিকল ছিড়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ডাকে লাখ লাখ বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। যে যুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি মায়ের সন্তান শহীদ হন। তাদের রক্তের বিনিময়ে আজকের এই স্বাধীনতা। সেই বাঙ্গালি মায়ের সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে গোটা জাতি। শত ব্যস্ততা ও শীত উপেক্ষা করে ছোট ছোট সন্তান নিয়ে এসে বিজয় তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে পরিচয় করে দিচ্ছেন অনেকেই।

আশুলিয়ার জামগড়া থেকে দুই বছরের সন্তান নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছেন পোশাক শ্রমিক মজিবর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ মহান বিজয় দিবস। আজকের এই দিনে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আমরা যে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি তা বোঝাতে আমার সন্তানকে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। ছোটবেলা থেকেই যেন আমার সন্তান দেশ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে এজন্যই মূলত স্মৃতিসৌধে আসা।

সাভার থেকে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছেন আহসান হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকের এই দিনে আমরা বিজয় লাভ করেছি। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের দাযিত্ব রয়েছে। শুধু শ্রদ্ধা জানালে হবে না। এসব দায়িত্ব আমাদের সবার, আমরা যারা স্বাধীনতা ভোগ করছি।

শ্রদ্ধা জানাতে আসা মুক্তিযোদ্ধা সফের আলী বলেন, আমরা দেশের মানুষকে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। আজকে আমরা স্বাধীন। দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে চলছে, স্বাধীনভাবে বেঁচে আছে। এটা দেখে গর্বে বুক ভরে যায়। জীবনে আর চাওয়ার কিছু নেই। যারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আজ লাখ লাখ জনতা। এ চিত্র দেখে জীবনে আর চাওয়া কি থাকতে পারে? যারা জীবন দিয়েছে তারা হয়তো আজ এ চিত্র দেখতে পারবে না। কিন্তু তাদের হয়ে আমি দেখছি যে বাংলার মানুষ তাদের কতটা শ্রদ্ধায় সিক্ত করেছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর সবার জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক উম্মুক্ত করা হয়। এরপর সৌধপ্রাঙ্গণে নামে গণমানুষের ঢল। দিনটি উপলক্ষ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *