যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

Slider বাংলার আদালত


যশোরে হৃদরোগে আক্রান্ত জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো: আমিনুর রহমান মধুকে ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে তাকে ১০ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী। সাথে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বদরুদ্দোজা বাদল, আবদুল জব্বার ভূইয়া, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মনিরুজ্জামান আসাদ, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

আদেশের বিষয় ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার দিবস সরকার পালন তো করেই না, বরং তারা মানবাধিকারকে হরণ করছে। তার নিষ্ঠুর উদহারণ হলো হৃদরোগে আক্রান্ত যুবদলের সহ-সভাপতি মো: আমিনুর রহমান মধুকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সব থেকে নির্মম হলো তার চিকিৎসা সমাপ্ত না করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই যে নির্মমতার বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি। হাইকোর্ট ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। একইসাথে তাকে পর্যাপ্ত ও সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যারা সরকার বিরোধী মতের আছেন তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্যাতন ও নিগৃহীত করা হচ্ছে।

এর আগে রোববার এ বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, জেলকোড এক শ’ বছরের পুরনো। কিন্তু এই আইনে কোনো ধরনের সংশোধন করা হয়নি আজও।

এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, আপনারা (রাজনীতিবিদ) তো জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সংসদে যান। কিন্তু মানুষের কল্যাণে কতটুকু কাজ করনে? দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু আজও কেন জেলকোড সংশোধন করে যুগোপযোগী আইনে পরিণত করতে পারলেন না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের সংস্কৃতি তো ভিন্ন। সংবিধানে মৌলিক অধিকারের কথা বলা হলেও তা আইন দ্বারা নির্ধারিত।

এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির মধ্যে মানবসত্ত্বার মর্যাদা রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই কলেজ শিক্ষককে ডান্ডাবেরি পরিয়ে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সেই চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি একটি মামলায় জামিন পেলেও তাকে অন্য মামলা শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে মৃত বা হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। সানাউল্লাহ মিয়া কয়েক বছর আগে মারা গেলেও তাকে নাশকতার মামলার আসামি করা হয়েছে। সরকার প্রতিনিয়তই সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করে চলেছে।

আদালত বলেন, ডান্ডাবেরি কোন ধরনের আসামিকে পরানো যাবে সেই বিষয়ে অ্যাপেক্স কোর্টের গাইডলাইন রয়েছে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ সোমবার আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতার যশোর যুবদলের নেতা আমিনুল ইসলাম মধুকে ডান্ডাবেরি পরিয়ে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *