পোশাক শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অধিকার ও তাদের মানোন্নয়ন নিয়ে নতুন একটি স্মারকপত্রে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্মারকপত্র প্রকাশের পর এ নিয়ে কথা বলেছেন ব্লিংকেন। তার বক্তব্যে বাংলাদেশের শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের বিষয়টি উঠে এসেছে, যিনি বাংলাদেশে হুমকি বোধ করছেন বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পরবর্তী আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবো। যদি আমার স্মৃতি ভুল না করে থাকে, তাহলে কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন, ২০১০ সালে। তবে তিনি একা নন, একাধিক শ্রমিক নেতা চাকরিরত অবস্থায় আন্দোলন করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে করা মামলা পরে তুলে নেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, তৈরি পোশাক খাতে যে অরাজকতা হয়, সেটা খুবই টেম্পরারি নেচারের (অস্থায়ী প্রকৃতির)। হঠাৎ করেই এটা শেষ হয়ে যায়, আবার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রানা প্লাজা ধসের পর পশ্চিমা দেশগুলোর কিছু ক্রেতা যখন কারখানাগুলো অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে, তখন কল্পনা আক্তারসহ আরো দু-একজন মিলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই গ্রেফতার হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, কাজেই কল্পনা আক্তার যেটা বলেছেন যে তিনি আমাদের বা অন্য কারো কাছ থেকে হুমকির শিকার হয়েছেন, এর ব্যাখ্যা আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চাইব। কল্পনা আক্তার খুবই সফলতার সাথে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেকর্ড কিংবা আপনারা যদি তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তিনি এ কথা বলেছেন কি না, বলে থাকলে কিসের ভিত্তিতে বলেছেন, তাকে এটা জিজ্ঞেস করার দায়িত্ব সাংবাদিকদের।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিন্তু কল্পনা আক্তার যে হুমকির কথা বলেছেন, সেটা অতীতে বাংলাদেশে কাউকে বলেননি। অবশ্যই এটার সত্যতা কতটুকু, সেটা আমরা জানতে চাইব। পাশাপাশি একটি বিষয় পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি, অ্যান্থনি ব্লিংকেন যে বৈঠকে এ কথা বলেছেন, সেটা হলো এশিয়া-প্যাসেফিক ইকোনমিক কনফারেন্স। যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যোগ দিয়েছেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, কাজেই ব্লিংকেনের বক্তব্য বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে দেয়া নয়।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টকর্মী কল্পনা আক্তার। আরো দু’টি দেশের কথা বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো ইস্যু তিনি উল্লেখ করেননি। গার্মেন্ট কিংবা টেক্সটাইলের কিছু ছিল না তাতে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠা, শক্তিশালী করা এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার বিষয়।