দ্বিতীয় দফায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অবরোধের প্রথম দিন আজ। এর আগে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের অবরোধ পালন করেছে দলটি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ১২টি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া প্রথম দফার মতো বিএনপির অবরোধের দ্বিতীয় দফাতেও সারাদেশে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঢাকার রাস্তায় যান চলাচল বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধ শুরুর আগের দিন অর্থাৎ শনিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রোববার সকাল ৭টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ১২টি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে কেবল রাজধানীতেই আগুন দেয়া হয়েছে সাতটি বাসে। তবে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া পায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, এবং রাজশাহী, বরিশাল এবং রংপুর বিভাগে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নয়টি বাস এবং একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় পুড়ে যায়।
তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, রোববার ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর শ্যামপুর, ডেমরা এবং মিরপুরে তিনটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুরে আরো একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
এর আগে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
প্রায় একই সময়ে এলিফ্যান্ট রোড, সায়েদাবাদ এবং গুলিস্তানে আরো আরো তিনটি বাসে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
এছাড়া শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, রংপুরের পীরগঞ্জ এবং ভোলার চরফ্যাশনেও বাসে আগুন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এসব ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে অবরোধের প্রথমদিন সকালে ঢাকার রাস্তায় যান চলাচল কম লক্ষ্য করা গেছে।
সকালে ঢাকার ধানমণ্ডি, পান্থপথ, গ্রিনরোড, কারওয়ান বাজার, তেঁজগাও, মহাখালী, গুলশান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, ফার্মগেট, বিজয় সরণিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সীমিত সংখ্যক বাস, ট্রাক এবং পিকআপ ভ্যান চলাচল করতে দেখা গেছে।
যদিও পুরো শহরেই ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে।
এছাড়া রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতোই।
এদিকে প্রথম দফার অবরোধের মতই রোববার সকালে ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়তে দেখা যায়নি। তবে টার্মিনালে বাসের টিকেট কাউন্টারগুলো খোলা ছিল।
গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গের ২৬টি জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের ২২টি জেলায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১২০০ বাস চলাচল করে বলে জানিয়েছে টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অবরোধের কারণে পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রী না পাওয়ায় দূরপাল্লার বাসগুলো ছাড়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাসের টিকেট বিক্রেতারা।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কর্মীরা সায়েদাবাদের অবস্থাও একই রকম বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া অবরোধের মধ্যে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে স্বাভাবিক দিনের মতোই ট্রেন চলাচল করতে দেখা গেছে।
সকাল থেকে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী সব ট্রেন ছাড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃক্ষ।
যদিও স্টেশনে যাত্রীদের সংখ্যা স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কম লক্ষ্য করা গেছে।
রোববার সকালে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং প্রবেশপথগুলোতে পুলিশের সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
এর মধ্যে গুলশান চেকপোস্টে মোটর সাইকেল, গাড়ি এবং সাধারণ মানুষের ব্যাগে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে।
এছাড়া প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় র্যাব ও পুলিশের বেশ কয়েকটি দলের টহল চোখে পড়েছে।
সূত্র : বিবিসি