সমাবেশের ৩ দিন আগেই বিএনপির ১২০০ নেতাকর্মী গ্রেফতার : রিজভী

Slider বাংলার মুখোমুখি


বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত সোমবার থেকে মাত্র তিন দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৩০ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৬টি ‘মিথ্যা মামলা’ করা হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির মহাসমাবেশকে সামনে রেখে সরকার দমন-পীড়নের মাত্রা আরো বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন,‘গ্রেফতার ও নিপীড়নের মুখে বিএনপির নেতাকর্মী ও গণতন্ত্রকামী জনগণ এখন ঘরে থাকতে পারছে না। এটি একটি নজিরবিহীন এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি।’

তিনি বলেন, পুলিশের গ্রেফতার ও হয়রানির ভয়ে স্বাধীন দেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারে না।

রিজভী বলেন,‘আমরা সারাদেশ থেকে গ্রেফতারের তথ্য পাচ্ছি। যারা জামিনে কারাগার থেকে বের হচ্ছেন, তাদের ফের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটা একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি।’

তিনি বলেন, জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সকল বাধা ও নিপীড়ন মোকাবিলা করে ২৮ অক্টোবর রাজপথে নামতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, তাদের দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পুলিশকে জানিয়েছে যে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করতে বিএনপি বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, ‘তারা (ডিএমপি) জানতে চেয়েছিল আমরা অন্য কোনো বিকল্প স্থানে সমাবেশ করব কি না। আমরা তাদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের সমাবেশ এই দলীয় কার্যালয়ের (নয়াপল্টন) সামনেই হবে।’

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সাংগঠনিক নেতারা এই সমাবেশ সফল করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণকে সংগঠিত করতে এবং সমাবেশে নিয়ে আসার জন্য আমরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী প্রচারণা চালাচ্ছি।’

এর আগে গত বুধবার নয়াপল্টনে বিকল্প ভেন্যুর দুটি নাম, সমাবেশে প্রত্যাশিত সংখ্যক লোকসমাগম, এর সময়কাল, কোথায় মাইক লাগানো হবে, অন্য দলের কেউ উপস্থিত থাকবেন কি না, এমন বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়ে বিএনপিকে চিঠি দিয়েছে ডিএমপি।

এর জবাবে বিএনপির পক্ষ থেকেও চিঠি দিয়ে বলা হয়, নয়াপল্টনে সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায় অন্য কোনো স্থানে সমাবেশ করা তাদের দলের পক্ষে সম্ভব নয়।

নয়াপল্টনে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ সমাবেশে অংশ নিতে পারে এবং অন্য দলের কোনো নেতাকর্মীও উপস্থিত থাকবেন না।

বিএনপি ডিএমপিকে আরো জানায়, দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হবে এবং অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দলের ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।

রিজভী বলেন, তারা বারবার বলে আসছেন যে তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে, কিন্তু সরকার সহিংসতা উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন,‘তারা সংঘাত ও সহিংসতার হুমকি দিচ্ছে। তারা এ দিন (শনিবার) লাঠিসোঁটা বহনের ঘোষণা দেন। তারা (আ.লীগ নেতা) গতকাল (বুধবার) বলেছেন এবং তাদের সাধারণ সম্পাদক কয়েকদিন আগে বলেছেন, এর পরিণতি শাপলা চত্বরের চেয়েও ভয়াবহ হবে। তারা হামলা করার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি হামলা করে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার হুমকিও দিচ্ছেন।’

তা সত্ত্বেও স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার পরিকল্পনা নিয়ে তারা এগোচ্ছেন বলে জানান এই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, জনসভার আগে সরকার প্রতিদিন ১০০-২০০ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে, যদিও তারা কোনো অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত নয়।

সূত্র : ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *