বৈধ অস্ত্রের তথ্য ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারে জমা না দিলে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে নাবৈধ অস্ত্রের তথ্য ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারে জমা না দিলে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে না
নিজের কাছে থাকা বৈধ অস্ত্রের তথ্য ডিজিটাল আর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ডিএএমএস) অন্তর্ভুক্ত না করালে পরবর্তীতে সেসব অস্ত্রের লাইসেন্স আর নবায়ন করা সম্ভব হবে না। লাইসেন্সের মেয়াদ পেরিয়ে গেলে সেগুলো অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। কাজেই পরবর্তীতে আইনি কোনও ঝুট ঝামেলা এড়াতে নিজের লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করাতে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসকের দফতরে তথ্য পৌঁছানোর জন্য জানানো হয়েছে।
যাদের কাছে বৈধ অস্ত্র রয়েছে তাদের প্রকৃত তথ্য দিয়ে ভবিষ্যতে অস্ত্রের লাইসেন্সের বিষয় নিশ্চিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
দেশব্যাপী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের স্বাক্ষর করা একটি পরিপত্র আকারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ইস্যু করা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী ব্যক্তিদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তুতকৃত ডিজিটাল আর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ডিএএমএস) মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নসহ যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারীদের ডাটা অনলাইনে এন্ট্রি করার জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স, এনআইডি ও টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, স্বাক্ষর সম্বলিত তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখায় সরাসরি জমা বা ইমেইলের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারীরা তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ হলে অথবা নিজেদের অবহেলার কারণে ডিজিটাল আর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ডিএএমএস এ আপলোড করা সম্ভব হবে না। যার কারণে ডিএএমএস সিস্টেম ব্যবহার করে ভবিষ্যতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে না।
একাধিক জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে বৈধ অস্ত্রের তথ্য সেভাবে কারও কাছে থাকত না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই ডিজিটাল সিস্টেমে তথ্য সংরক্ষণ এর কারণে এখন নিমিষেই তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে। কোনও এলাকায় কতগুলো বৈধ অস্ত্র রয়েছে এবং কারা এসব অস্ত্র ব্যবহার করছেন এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনেকেউ তথ্য দিচ্ছেন। পরবর্তীতে এসব তথ্য ডিএএমএস এ অন্তর্ভুক্ত হলে কেউ বাদ পড়েছে কিনা বা কারা তথ্য দেয়নি তা জানা সম্ভব হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অস্ত্রের লাইসেন্সের তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণের জন্য ডিএএমএস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এতে করে দেশে বৈধ অস্ত্রধারীর সংখ্যা কত এ বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যাবে। কোন এলাকায় কতজন বৈধ অস্ত্রধারী রয়েছেন, তাদের পেশা কী এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যাবে।
গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন সময় বৈধ অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেওয়া, ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য আমরা পেয়ে থাকি। কোনও ব্যক্তি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়ালে দ্রুত তার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে। দ্রুত জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। এতে করে অস্ত্রধারীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন গোয়েন্দা বিভাগের এই কর্মকর্তা।