যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান দেশগুলো স্থল হামলা বিলম্বিত করার জন্য ইসরাইলের ওপর নীরবে চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক সিনিয়র কর্মকর্তা। তারা আশঙ্কা করছেন, স্থল হামলা হলে আরো বন্দী মুক্তির চলমান প্রয়াসটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস গতকাল দুই মার্কিন বন্দীকে মুক্তি দেয়ার প্রেক্ষপটে ওই সরকারগুলো ইসরাইলকে চাপ দিচ্ছে জানানো হয়েছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ইসরাইলের একটি পত্রিকাকে জানান, পাশ্চাত্যের সরকারগুলো তাদের নাগরিকদের মুক্তির জন্য বর্তমানে ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারা বলছে, স্থল হামলা হলে এসব বন্দীর মুক্তি আরো কঠিন হয়ে যাবে।
ওই সরকারগুলো স্থল হামলা হওয়ার খুবই সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করে। তারা ইসরাইলকে হামলার পরিকল্পনা বাদ দিতেও বলছে না। তবে তারা বন্দীদের মুক্তির জন্য আরো কিছু সময় চাচ্ছে বলে ওই কূটনৈতিক কর্মকর্তা বলেন।
দুই আমেরিকানকে ছেড়ে দিয়েছে হামাস
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস তাদের হাতে বন্দী দুই আমেরিকানকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা হলেন জুডিথ তাই রানান এবং তার ১৭ বছর বয়স্কা মেয়ে নাতালি রানান। হামাসের হাতে বন্দী থাকার প্রায় দুই সপ্তাহ পর তারা মুক্তি পেলেন। দৃশ্যত কাতার ও হামাসের মধ্যে আলোচনার জের ধরে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এ দুজনকে বর্ডার উইথ গাজার হাতে তুলে দেয়া হয়। তারা এখন ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) জিম্মায় রয়েছে। আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে তাদেরকে আটক করেছিল হামাস। ওই হামলায় প্রায় ১৪ শ’ লোক নিহত হয়েছিল। এরপর থেকে গাজায় ইসরাইল অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই নিহতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
মুক্তিপ্রাপ্ত নাতালির বাবা উইরি রানান টেলিফোনে তার মেয়ের সাথে কথা বলে জানিয়েছেন, তার মেয়ে খুবই ভালো আছে। মা ও মেয়ে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মায়ের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ায় তাদেরকে ‘মানবিক কারণে’ মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে বলা হয়েছে। একটি সূত্র জানায়, কাতার ও হামাসের মধ্যে আলোচনার ফলে তারা মুক্তি পেয়েছে।
এক বিবৃতিতে হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেন, ‘কাতারি প্রয়াসের ফলে মানবিক কারণে আল কাসসাম ব্রিগেড দুই আমেরিকানকে মুক্তি দিয়েছে। এছাড়া হামাস এর মাধ্যমে এটাও প্রমাণ করতে চেয়েছে যে বাইডেন ও তার ফ্যাসিস্ট প্রশাসন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
কাতারও দুই আমেরিকানের মুক্তি নিশ্চিত করে বলেছে, তারা ‘আরো আটক ব্যক্তিকে মুক্তির জন্য তারা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখবে।’ কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল মুখপাত্র মাজিদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
সূত্র : সিএনএন, আল জাজিরা এবং অন্যান্য